সুদানের শরণার্থী শিবিরে রক্তগঙ্গা: আধা সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত শতাধিক!

- আপডেট সময় ১২:৪১:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ২০ বার পড়া হয়েছে
আফ্রিকার দেশ সুদানের দারফুর অঞ্চলের এক দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টানা দুই দিনের এই হামলায় অন্তত ১০০ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশু ও ৯ জন ত্রাণকর্মীও রয়েছেন।
জাতিসংঘের সুদানে নিযুক্ত মানবিক সমন্বয়কারী ক্লেমেনটাইন এনকুয়েটা-সালামি এই নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি জানান, আরএসএফ এবং তাদের সহযোগী মিলিশিয়ারা উত্তর দারফুরের প্রাদেশিক রাজধানী এল-ফাশের এবং এর নিকটবর্তী জমজম ও আবু শোরুক শরণার্থী শিবিরে এই নারকীয় হামলা চালায়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই খবরটি নিশ্চিত করেছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই দুটি শরণার্থী শিবিরে সাত লক্ষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। পূর্বের সংঘাতের কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা এই মানুষগুলো সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন।
এনকুয়েটা-সালামি আরও জানান, গত শুক্র ও শনিবার এই দুই দিন ধরে হামলা চলে। জমজম শিবিরে অবস্থিত হাতে গোনা কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটিতে কর্মরত অবস্থায় ৯ জন ত্রাণকর্মী নিহত হন। নিহতদের মধ্যে রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীরাও রয়েছেন। তিনি অবিলম্বে এই ধরনের সহিংসতা বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা নিহত ত্রাণকর্মীদের পরিচয় প্রকাশ করেননি, তবে সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার ছয়জন চিকিৎসাকর্মী শুক্রবার জমজমের তাদের হাসপাতালে আরএসএফের হামলায় নিহত হয়েছেন। সংগঠনটি আরও জানায়, নিহতদের মধ্যে চিকিৎসক মাহমুদ বাবাকার ইদরিস এবং সংস্থাটির আঞ্চলিক প্রধান আদম বাবাকার আবদুল্লাহও রয়েছেন। এই হামলাকে ‘অপরাধমূলক ও বর্বর’ আখ্যা দিয়ে এর জন্য সরাসরি আরএসএফকে দায়ী করেছে সংগঠনটি।
সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী জাতীয় রাজধানী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার পর আরএসএফ এল-ফাশের শহরে তাদের হামলা আরও জোরদার করেছে। উল্লেখ্য, এল-ফাশের দারফুরের একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী যা এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এই মাসের শুরুতেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে আরএসএফের বিরুদ্ধে নারী ও কিশোরীদের ওপর ‘ভয়াবহ’ যৌন সহিংসতা ও গণধর্ষণের অভিযোগ তোলা হয়, যা সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে তাদের একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শরণার্থী শিবিরে এই নতুন হামলা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।