ইরান কখনো আপোস করবে না : খামেনি

- আপডেট সময় ১২:৩২:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / ২৫২ বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত এবং উদ্বেগজনক বিষয়গুলোর একটি হলো ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরেই ছিল এক চাপা উত্তেজনার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার কথা বললেন, তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ইরান কখনোই জায়নবাদীদের সঙ্গে আপস করবে না।” শুধু তাই নয়, খামেনি আরও বলেন, “আমরা জায়নবাদীদের প্রতি কোনো দয়া দেখাবো না।” তার এই মন্তব্য প্রমাণ করে, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানে কতটা অনড়।
খামেনির এই হুঁশিয়ারির মধ্যেই ইসরায়েল নতুন করে ইরানে হামলা চালিয়েছে। রয়টার্স বার্তা সংস্থার খবর অনুযায়ী, তেহরানের কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া, তেহরানের ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ও ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সম্পর্ক রয়েছে, যা ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু বেছে নেওয়ার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টাকে তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে আসছে।
তবে, ইরানও চুপ করে থাকেনি। ইসরায়েলি হামলার পরপরই মঙ্গলবার রাতে ইরানও নতুন করে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে। হামলার আগেই ইরানি কর্মকর্তারা তেল আবিবের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘ফাত্তাহ-১’ নামের একটি হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়েছে।
এই ‘ফাত্তাহ-১’ মিসাইলটি ইরানের অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তির একটি নিদর্শন, যা শব্দের চেয়ে কয়েক গুণ দ্রুত গতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এর আগে গত এপ্রিলেও ইরানের এই ধরনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দেখা গেছে, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনা।
এই দফায় দফায় হামলা এবং পাল্টা হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মহল এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বৈশ্বিক শক্তিগুলো চাইছে এই উত্তেজনা যেন আর না বাড়ে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু খামেনির সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং দুই পক্ষের সামরিক পদক্ষেপ দেখে মনে হচ্ছে, সহসা এই সংঘাত থামছে না।