ছায়ানটের বর্ষবরণে উদার, সহিষ্ণু সমাজ গঠনের ডাক

- আপডেট সময় ১২:২৪:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / ৯ বার পড়া হয়েছে
রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণের আয়োজনে ছায়ানটের পক্ষ থেকে সমাজে সহনশীলতা, মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতির ধারাবাহিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে এক মানবিক, উদার সমাজ গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার সকালে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, “আমরা এমন এক সমাজ চাই, যেখানে মানুষ ধর্ম, জাতি কিংবা অর্থনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে পরস্পরের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।” তিনি মনে করেন, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে হৃদয়ে ধারণ এবং সংস্কৃতিকে মুক্তভাবে বিকাশে সুযোগ দিলে একটি আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্ভব।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা দীর্ঘ সংগ্রামের ফল, যা কেবল রাজনৈতিক অর্জন নয়, বরং শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জাতিসত্তার প্রকাশ। আর সেই জাতিসত্তার উন্মেষে বাংলা নববর্ষের অসাম্প্রদায়িক উৎসবের ভূমিকা অনস্বীকার্য।”
সারওয়ার আলী আরও বলেন, “দেশ স্বাধীন হলেও মানবিক অধিকার, বিশেষ করে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা, অসহিষ্ণুতার উত্থান এবং বিভেদের রাজনীতিতে আমাদের সমাজ এখনও সংগ্রামে আছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি সমাজকেও নিতে হবে সক্রিয় ভূমিকা।”
এবারের অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা ছিল— ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। নতুন আলোর প্রতীক হিসেবে গান, প্রকৃতির প্রেম এবং মানবিক বোধ জাগানো গান দিয়েই সাজানো হয়েছিল ছায়ানটের ৫৮তম এই আয়োজন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ফিলিস্তিনে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত সবাই। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় এবারের বর্ষবরণ।
এ আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার হয় ছায়ানটের ইউটিউব ও ফেসবুক পেজ ছাড়াও বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে। রমনা বটমূলে এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ছায়ানট আয়োজন করে আসছে ১৯৬৭ সাল থেকে। এবারের প্রস্তুতি চলে টানা তিন মাস ধরে ধানমন্ডির সংস্কৃতি ভবনে। মঞ্চ নির্মাণ শুরু হয় ৮ এপ্রিল থেকে।
এই বর্ষবরণ যেন শুধু নতুন বছরের সূচনা নয়, বরং একটি নতুন সমাজবোধ, মানবিকতা ও সংস্কৃতির পথে আহ্বান।