০১:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ মে ২০২৫

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা: পোশাক শিল্পে নতুন চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:৩১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং দুই দেশের তিক্ত সম্পর্কের জেরে বাণিজ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি সীমিত করেছে, আর ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করেছে। এর ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য সুতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালে ভারত ১.৬ বিলিয়ন ডলারের সুতা রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশে, যার এক-তৃতীয়াংশ এসেছিল স্থলপথে।

এখন সমুদ্র ও আকাশপথে আমদানি ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। আগে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা ভারতের শহরগুলো দিয়ে পোশাক ইউরোপ ও আমেরিকায় পাঠাতেন। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ থাকায় এটি এখন অসম্ভব।

এমজিএইচ গ্রুপের প্রধান আনিস আহমেদ বলেন, “এটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা। সমুদ্রপথে পণ্য পৌঁছাতে আট সপ্তাহ লাগে, যেখানে ভারতের রুটে মাত্র এক সপ্তাহ লাগতো।”

বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক, গত বছর ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ভারতের স্থল ও বিমানপথ দিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমিত বিমানবন্দর সক্ষমতার কারণে সরাসরি রপ্তানি কঠিন।

এই সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে মন্তব্য দিল্লিতে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি এই অঞ্চলকে চীনা অর্থনীতির সম্প্রসারণের পথ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা ভারতের কৌশলগত শিলিগুড়ি করিডোর বা ‘চিকেন নেক’-এর নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও ভারতে নির্বাসন, সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ এবং ভারতের কঠোর ভিসানীতি সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারকরা বাংলাদেশি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে, আর ঢাকা প্রত্যর্পণের দাবিতে সোচ্চার।

এই উত্তেজনা দুই দেশের জনগণের সম্পর্ককেও দুর্বল করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বড় ক্ষতি হতে পারে।

 

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা: পোশাক শিল্পে নতুন চ্যালেঞ্জ

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা: পোশাক শিল্পে নতুন চ্যালেঞ্জ

আপডেট সময় ০২:৩১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং দুই দেশের তিক্ত সম্পর্কের জেরে বাণিজ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি সীমিত করেছে, আর ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করেছে। এর ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য সুতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালে ভারত ১.৬ বিলিয়ন ডলারের সুতা রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশে, যার এক-তৃতীয়াংশ এসেছিল স্থলপথে।

এখন সমুদ্র ও আকাশপথে আমদানি ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। আগে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা ভারতের শহরগুলো দিয়ে পোশাক ইউরোপ ও আমেরিকায় পাঠাতেন। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ থাকায় এটি এখন অসম্ভব।

এমজিএইচ গ্রুপের প্রধান আনিস আহমেদ বলেন, “এটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা। সমুদ্রপথে পণ্য পৌঁছাতে আট সপ্তাহ লাগে, যেখানে ভারতের রুটে মাত্র এক সপ্তাহ লাগতো।”

বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক, গত বছর ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ভারতের স্থল ও বিমানপথ দিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমিত বিমানবন্দর সক্ষমতার কারণে সরাসরি রপ্তানি কঠিন।

এই সংকটের মূলে রয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে মন্তব্য দিল্লিতে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি এই অঞ্চলকে চীনা অর্থনীতির সম্প্রসারণের পথ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা ভারতের কৌশলগত শিলিগুড়ি করিডোর বা ‘চিকেন নেক’-এর নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলেছে।

এদিকে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও ভারতে নির্বাসন, সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ এবং ভারতের কঠোর ভিসানীতি সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারকরা বাংলাদেশি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে, আর ঢাকা প্রত্যর্পণের দাবিতে সোচ্চার।

এই উত্তেজনা দুই দেশের জনগণের সম্পর্ককেও দুর্বল করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বড় ক্ষতি হতে পারে।

 

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা: পোশাক শিল্পে নতুন চ্যালেঞ্জ