প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
মানবিক করিডোর বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে সরকার

- আপডেট সময় ১১:০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম মিয়ানমারের রাখাইনে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে মানবিক করিডোর নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই সরকারের অবস্থান নিয়ে আবারও খোলামেলা কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যদি জাতিসংঘ করিডোরের উদ্যোগ নেয় এবং মিয়ানমার রাজি থাকে তাহলে সরকার সবার সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শুক্রবার (২ মে) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
তিনি আরও বলেন, মানবিক করিডোর বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। করিডোর হতে হবে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্টতায়। আমরা বলেছি যে, মানবিক করিডোরে আমরা ইচ্ছুক, যদি জাতিসংঘ কোনো উদ্যোগ নেয়। তাছাড়া এ ধরনের বিষয়ে দুটি দেশের সঙ্গে কথা বলতে হয়।
শফিকুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আওয়ামী লীগের কথা বলার কোনো অধিকারই নেই। তারা রোহিঙ্গা নাম নিতে ভয় পেত। মিয়ানমারের লোকেরা বলতো রোহিঙ্গারা বাঙালি, তারাও একই কথা বলতো। রোহিঙ্গা নাম নিতে ভয় পেয়ে তারা নাম দিয়েছিল এফডিএমএন (বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক)। রোহিঙ্গা নাম না নেওয়া মানে আপনি রোহিঙ্গাদের অধিকারে বিশ্বাস করেন না।
চট্টগ্রাম বন্দরে সরকার চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বিদেশি বিনিয়োগকারী ও অপারেটর নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিতে চাইলে বন্দরের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। আমরা বিশ্বের টপ কোম্পানিগুলোর কাছে বন্দরের দায়িত্ব দিতে চাই, যাদের বিভিন্ন দেশে বড় বড় বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বছরে ১২ লাখ ৭০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডেল হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ছয় গুণ বাড়িয়ে ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টিইইউএসে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। এসব কোম্পানির কেউ ৫০, ৬০ বা ৯০টি পর্যন্ত বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা রাখে।
চুক্তি ওপেন টেন্ডার অথবা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জি-টু-জি ভিত্তিতে হতে পারে। তবে কোনো রকম রেপুটেশন ছাড়া কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার মূল লক্ষ্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে রূপান্তর করা, যা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের ৩০-৪০ কোটি মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্দরকে ঘিরে মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে। সেই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলছি, যারা ৭০ থেকে ৯০টি বন্দর হ্যান্ডলিং করছে। যতো দ্রুত সম্ভব এটি করার চেষ্টা করছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চাই।
দেশি অপারেটররা টার্মিনাল হ্যান্ডলিং করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যে পরিমাণ বিনিয়োগ লাগবে, বিশেষজ্ঞ লাগবে সেটি দেশি কারও নেই। উন্নত বিশ্বের অনেক বড় বড় বন্দর অভিজ্ঞ প্রাইভেট কোম্পানিকে দিয়েছে। আমাদের সেই বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রমুখ।