০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

পাকিস্তানের হুমকি, সিন্ধু নদে বাঁধ দিলে সামরিক হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১১:৪৬:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ভারত যদি তার সীমানায় সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে বাঁধ বা এ জাতীয় কোনো স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে সামরিক হামলা চালাবে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ টেলিভিশন প্রোগ্রামে শুক্রবার (২ মে) অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন খাজা আসিফ।

সেখানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুধু বন্দুকের গুলি বা কামানের গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না। বহুভাবে আগ্রাসন চালানো যায়। যেমন সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া বা পানিপ্রবাহকে ভিন্নপথে চালিত করাও একপ্রকার আগ্রাসন। কারণ এর ফলে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে মৃত্যু হবে লাখ লাখ মানুষের।

তাই সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ আটকাতে যদি তারা (নয়াদিল্লি) বাঁধ বা এই জাতীয় স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আমরা আঘাত করব এবং সেই স্থাপনা ধ্বংস করব।

তবে আপাতত আমরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি (সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি) নিয়ে আলোচনা করছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে গত ২২ এপ্রিল বিকেলে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতরা সবাই পুরুষ।

বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

ভারত ভয়াবহ এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি।

এদিকে ইসলামাবাদ পেহেলগামের হামলার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে। তবে নয়াদিল্লির শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধ, পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় দেশটি।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী প্রতিবেশী দেশেল মধ্যে এ হামলাকে কেন্দ্র করে গত ১১ দিন ধরে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য সবুজ সংকেত তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনও কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি, তবে খাজা আসিফ মনে করেন— এখনও দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যুদ্ধের হুমকি আমরা এড়িয়ে যেতে পেরেছি—এখনও এমনটা ভাবার সময় আসেনি, জিও নিউজকে বলেন খাজা আসিফ।

সূত্র : জিও নিউজ

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানের হুমকি, সিন্ধু নদে বাঁধ দিলে সামরিক হামলা

আপডেট সময় ১১:৪৬:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ভারত যদি তার সীমানায় সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে বাঁধ বা এ জাতীয় কোনো স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, সেক্ষেত্রে সামরিক হামলা চালাবে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ টেলিভিশন প্রোগ্রামে শুক্রবার (২ মে) অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন খাজা আসিফ।

সেখানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুধু বন্দুকের গুলি বা কামানের গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না। বহুভাবে আগ্রাসন চালানো যায়। যেমন সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া বা পানিপ্রবাহকে ভিন্নপথে চালিত করাও একপ্রকার আগ্রাসন। কারণ এর ফলে ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কারণে মৃত্যু হবে লাখ লাখ মানুষের।

তাই সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ আটকাতে যদি তারা (নয়াদিল্লি) বাঁধ বা এই জাতীয় স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আমরা আঘাত করব এবং সেই স্থাপনা ধ্বংস করব।

তবে আপাতত আমরা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি (সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি) নিয়ে আলোচনা করছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে গত ২২ এপ্রিল বিকেলে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতরা সবাই পুরুষ।

বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

ভারত ভয়াবহ এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি।

এদিকে ইসলামাবাদ পেহেলগামের হামলার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে। তবে নয়াদিল্লির শাস্তিমূলক পদক্ষেপের পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধ, পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় দেশটি।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরবৈরী প্রতিবেশী দেশেল মধ্যে এ হামলাকে কেন্দ্র করে গত ১১ দিন ধরে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য সবুজ সংকেত তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনও কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়নি, তবে খাজা আসিফ মনে করেন— এখনও দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যুদ্ধের হুমকি আমরা এড়িয়ে যেতে পেরেছি—এখনও এমনটা ভাবার সময় আসেনি, জিও নিউজকে বলেন খাজা আসিফ।

সূত্র : জিও নিউজ