ঢাকা ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের দাবি ভারতের, দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১১:০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ২৬৩ বার পড়া হয়েছে

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে ওই পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা। এদিকে পাকিস্তান ও ভারতের সেনাদের মধ্যে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রবিবার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে।

এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারা দেওয়ার সময় গত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তান বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে।

এদিকে আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় প্রকাশ না করলেও বর্তমানে তিনি বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে আছেন।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে ভুল করে কোনো সৈন্য অন্য দেশে পা রাখলে তাদের ফেরত দেওয়ার একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু সম্প্রতি উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান সাহুকে ফেরত দিচ্ছে না, ফলে ভারতও পাকিস্তানি রেঞ্জারের ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রেঞ্জারকে আটক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করে। এটি ১০ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের ধারাবাহিকতার অংশ।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মিরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টর জুড়ে এই হামলা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীও এই হামলার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ। যেখানে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি পোস্ট অংশ নেয়। অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বিএসএফ সদস্য সাহুর মুক্তির জন্য একাধিক বৈঠক হলেও পাকিস্তান এখনও কোনও সময়সীমা বা অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

এই গোলাগুলির ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।

সম্প্রতি অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে ‘খোলামেলা উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান ‘সিন্ধু মহড়ার’ অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের দাবি ভারতের, দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ

আপডেট সময় ১১:০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে ওই পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা। এদিকে পাকিস্তান ও ভারতের সেনাদের মধ্যে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রবিবার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে।

এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারা দেওয়ার সময় গত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তান বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে।

এদিকে আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় প্রকাশ না করলেও বর্তমানে তিনি বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে আছেন।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে ভুল করে কোনো সৈন্য অন্য দেশে পা রাখলে তাদের ফেরত দেওয়ার একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু সম্প্রতি উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান সাহুকে ফেরত দিচ্ছে না, ফলে ভারতও পাকিস্তানি রেঞ্জারের ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রেঞ্জারকে আটক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করে। এটি ১০ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের ধারাবাহিকতার অংশ।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মিরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টর জুড়ে এই হামলা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীও এই হামলার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ। যেখানে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি পোস্ট অংশ নেয়। অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বিএসএফ সদস্য সাহুর মুক্তির জন্য একাধিক বৈঠক হলেও পাকিস্তান এখনও কোনও সময়সীমা বা অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

এই গোলাগুলির ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।

সম্প্রতি অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে ‘খোলামেলা উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান ‘সিন্ধু মহড়ার’ অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।