০৪:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

কক্সবাজারে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারে ফের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি! গত কয়েক দিনে আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের ১ মে পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদেরকে ‘নতুন রোহিঙ্গা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

এর আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে আরও ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা।

নতুন করে আসা এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। কেউ আশ্রয় নিয়েছে বিদ্যালয়ের মতো রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন অস্থায়ী স্থাপনায়।

এই পরিস্থিতিতে, নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সম্প্রতি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন – ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠি দিয়েছে।

তবে, কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখনও সেই চিঠির কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান।

কমিশনার মিজানুর রহমান আরও জানান, ইউএনএইচসিআর-এর চিঠির জবাব এখনও প্রস্তুত করা হয়নি। তবে, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু নতুন করে ঘর তৈরি করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে নেই। সরকারের প্রধান লক্ষ্য এখন প্রত্যাবাসন।

এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি – আরসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মংডুর বুড়া শিকদারপাড়া এলাকায় রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন।

আরাকান আর্মির সদস্যরা রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই এই নিপীড়ন আরও বেড়েছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্বদিকে অবস্থিত শিকদারপাড়া থেকে বহু রোহিঙ্গা ইতিমধ্যেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। প্রাণের ভয়ে অনেকেই পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে।

উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি নতুন করে মংডুতে হামলা চালাচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, আরসাকে আশ্রয় দেওয়ার অজুহাতে গত চার গ্রামে হামলা চালানো হয়েছে। মূলত, সেখানে এখনও যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদেরকে তাড়াতেই এই ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে আরাকান আর্মি।

এমন পরিস্থিতিতে, গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সৈকতের মুসলিমাবাদ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ ৩৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে র্যাব। র্যাব-৭ এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে বেশ কিছু রোহিঙ্গা পতেঙ্গা ঘাট দিয়ে অনুপ্রবেশের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়।

আটক হওয়া এই রোহিঙ্গারা কোথা থেকে এসেছে – ভাসানচর নাকি সরাসরি মিয়ানমার থেকে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, প্রত্যেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করেছে।

তাদের চট্টগ্রামে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি ছিল। এরপর তারা কোথায় যেতে চেয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বর্তমানে, তাদেরকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কক্সবাজারে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশ

আপডেট সময় ১২:৩০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

কক্সবাজারে ফের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি! গত কয়েক দিনে আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের ১ মে পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদেরকে ‘নতুন রোহিঙ্গা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

এর আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে আরও ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা।

নতুন করে আসা এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। কেউ আশ্রয় নিয়েছে বিদ্যালয়ের মতো রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন অস্থায়ী স্থাপনায়।

এই পরিস্থিতিতে, নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সম্প্রতি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন – ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠি দিয়েছে।

তবে, কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখনও সেই চিঠির কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান।

কমিশনার মিজানুর রহমান আরও জানান, ইউএনএইচসিআর-এর চিঠির জবাব এখনও প্রস্তুত করা হয়নি। তবে, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু নতুন করে ঘর তৈরি করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে নেই। সরকারের প্রধান লক্ষ্য এখন প্রত্যাবাসন।

এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি – আরসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মংডুর বুড়া শিকদারপাড়া এলাকায় রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন।

আরাকান আর্মির সদস্যরা রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই এই নিপীড়ন আরও বেড়েছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্বদিকে অবস্থিত শিকদারপাড়া থেকে বহু রোহিঙ্গা ইতিমধ্যেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। প্রাণের ভয়ে অনেকেই পালিয়ে আসছেন বাংলাদেশে।

উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের জানিয়েছেন, আরাকান আর্মি নতুন করে মংডুতে হামলা চালাচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, আরসাকে আশ্রয় দেওয়ার অজুহাতে গত চার গ্রামে হামলা চালানো হয়েছে। মূলত, সেখানে এখনও যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদেরকে তাড়াতেই এই ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে আরাকান আর্মি।

এমন পরিস্থিতিতে, গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সৈকতের মুসলিমাবাদ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ ৩৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে র্যাব। র্যাব-৭ এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে বেশ কিছু রোহিঙ্গা পতেঙ্গা ঘাট দিয়ে অনুপ্রবেশের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়।

আটক হওয়া এই রোহিঙ্গারা কোথা থেকে এসেছে – ভাসানচর নাকি সরাসরি মিয়ানমার থেকে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, প্রত্যেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করেছে।

তাদের চট্টগ্রামে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি ছিল। এরপর তারা কোথায় যেতে চেয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বর্তমানে, তাদেরকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।