ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

ময়মনসিংহে রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৭:১৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • / ২৫৪ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে হামলা করে নির্মাণাধীন স্থাপনা ও পুরোনো বাড়ির ভেতরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধীরা গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িটিকে দালাল মহল আখ্যায়িত করেন। সম্প্রতি কুটুম বাড়ি নামে একটি রেস্তোরাঁর মালিক বজলুর রহমান ১২ বছরের জন্য রওশন এরশাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা গত ২৩ এপ্রিল বাড়ির সামনে মানববন্ধন করেন। তারা বাড়িতে বাণিজ্যিক ভবন না করে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের দাবি জানান। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের দাবি উপেক্ষা করে রেস্তোরাঁর জন্য স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকায় আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে বৈষম্যবিরোধীরা সেখানে হামলা চালান।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ বলেন, রওশন এরশাদ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ৫ আগস্টের পর রওশন এরশাদের বাড়িটি দালাল মহল আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু বাড়িটিকে বাণিজ্যিক ভবন বানানোর পাঁয়তারা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিলেও কাজ বন্ধ হয়নি। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের আস্তানায় বাণিজ্যিক স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে গিয়ে নির্মাণাধীন ইটের দেয়ালগুলো ভেঙে দেয়। পরে পুরোনো ভবনের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করা হয়।

সরেজমিন ‘কুটুম বাড়ি’ রেস্তোরাঁর মালিক বজলুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও বাড়িতে ছিলেন তার শ্যালক আহসানুল করীম। তিনি বলেন, রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়ি হওয়ায় দালাল মহল আখ্যা দিয়ে এখানে ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিকদের জিনিসপত্র দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে সেগুলো নিয়ে যায় তারা। ছাত্রদল থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতা হওয়া ওয়ালিদ আহমেদের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়।

হামলা-ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবনটিকে দালাল মহল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। বাণিজ্যিক স্থাপনার নির্মাণকাজ চলায় ক্ষোভ থেকে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, বাড়িটি ঘিরে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ আছে। এজন্য সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা ঠিক নয়। যেহেতু পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, সেখানে রেস্তোরাঁ না করাই উচিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা স্মারকলিপি দিলেও অনেক কাজের মধ্যে হয়তো ভুলে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ময়মনসিংহে রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

আপডেট সময় ০৭:১৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে হামলা করে নির্মাণাধীন স্থাপনা ও পুরোনো বাড়ির ভেতরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধীরা গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িটিকে দালাল মহল আখ্যায়িত করেন। সম্প্রতি কুটুম বাড়ি নামে একটি রেস্তোরাঁর মালিক বজলুর রহমান ১২ বছরের জন্য রওশন এরশাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বাড়িটি ভাড়া নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা গত ২৩ এপ্রিল বাড়ির সামনে মানববন্ধন করেন। তারা বাড়িতে বাণিজ্যিক ভবন না করে জুলাই স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের দাবি জানান। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের দাবি উপেক্ষা করে রেস্তোরাঁর জন্য স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকায় আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে বৈষম্যবিরোধীরা সেখানে হামলা চালান।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ বলেন, রওশন এরশাদ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ৫ আগস্টের পর রওশন এরশাদের বাড়িটি দালাল মহল আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু বাড়িটিকে বাণিজ্যিক ভবন বানানোর পাঁয়তারা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিলেও কাজ বন্ধ হয়নি। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের আস্তানায় বাণিজ্যিক স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে গিয়ে নির্মাণাধীন ইটের দেয়ালগুলো ভেঙে দেয়। পরে পুরোনো ভবনের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করা হয়।

সরেজমিন ‘কুটুম বাড়ি’ রেস্তোরাঁর মালিক বজলুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও বাড়িতে ছিলেন তার শ্যালক আহসানুল করীম। তিনি বলেন, রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়ি হওয়ায় দালাল মহল আখ্যা দিয়ে এখানে ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিকদের জিনিসপত্র দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে সেগুলো নিয়ে যায় তারা। ছাত্রদল থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতা হওয়া ওয়ালিদ আহমেদের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়।

হামলা-ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবনটিকে দালাল মহল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। বাণিজ্যিক স্থাপনার নির্মাণকাজ চলায় ক্ষোভ থেকে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, বাড়িটি ঘিরে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ আছে। এজন্য সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা ঠিক নয়। যেহেতু পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, সেখানে রেস্তোরাঁ না করাই উচিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা স্মারকলিপি দিলেও অনেক কাজের মধ্যে হয়তো ভুলে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।