ঢাকা ০৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

অবশেষে বাংলাদেশে চালু হচ্ছে গুগল পে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:৩৭:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

বহুল প্রতীক্ষিত গুগল পে অবশেষে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে! আগামী এক মাসের মধ্যেই এই জনপ্রিয় ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা দেশে কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের ডিভাইসকেই একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন, যা দৈনন্দিন লেনদেনে আনবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

গুগল পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (স্থানীয় মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও এই সেবার আওতায় আনা হবে।

এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সমর্থিত পেমেন্ট টার্মিনালে নিজেদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে সহজেই ‘ট্যাপ অ্যান্ড পে’ পদ্ধতিতে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। এর ফলে কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, সিনেমার টিকিট কেনা কিংবা যাত্রা—সব ক্ষেত্রেই আর পকেটে একাধিক প্লাস্টিক কার্ড বা নগদ টাকা বহন করার প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

গুগল পে মূলত একটি ডিজিটাল ওয়ালেট, এটি ব্যবহারকারীর আর্থিক তথ্য সরাসরি নিজেদের সার্ভারে সংরক্ষণ করে না, বরং লেনদেন সম্পন্ন হয় ব্যবহারকারীর নিজ নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে।

এ কারণে সেবাটি চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

এটি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করে এবং দ্রুত ও সহজে লেনদেনের সুযোগ করে দেয়।

গুগল পের প্রধান সুবিধাগুলো হলো:

সহজ ও দ্রুত লেনদেন: গুগল পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর গতি এবং ব্যবহারের সহজতা। এনএফসি (NFC) প্রযুক্তির মাধ্যমে পেমেন্ট টার্মিনালে শুধু ফোন ট্যাপ করেই পেমেন্ট করা যায়। অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রেও বার বার কার্ডের তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

নিরাপত্তা: গুগল পে একাধিক স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে। আপনার কার্ডের আসল নম্বর ব্যবসায়ীর সাথে শেয়ার না করে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করা হয়, যাকে টোকেনাইজেশন বলে। এছাড়াও, ফোনে স্ক্রিন লক (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা পিন) থাকলে সেটি অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর হিসেবে কাজ করে।

একাধিক কার্ড এক জায়গায়: মানিব্যাগে একাধিক কার্ড নিয়ে ঘোরার পরিবর্তে গুগল পেতে আপনি একাধিক ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড যুক্ত করে রাখতে পারবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন।

 খরচের হিসাব রাখা সহজ: গুগল পে আপনার লেনদেনের ইতিহাস সংরক্ষণ করে, যা আপনাকে আপনার খরচের উপর নজর রাখতে সাহায্য করে।

 কন্টাক্টলেস পেমেন্ট: বিশেষ করে বর্তমান সময়ে, স্পর্শবিহীন লেনদেন একটি বড় সুবিধা।

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা পাঠানো: কিছু কিছু দেশে, ডেবিট কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠাতে কোনো ফি না লাগলেও, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা পাঠালে একটি ছোট শতাংশ ফি হিসেবে কাটা হতে পারে। এটি সাধারণত ১.৫% থেকে ৩% পর্যন্ত হতে পারে, তবে এটি দেশ ও ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা পাঠালে ২.৯% ফি প্রযোজ্য হতে পারে।

বাংলাদেশে গুগল পে চালু হলে ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে ফি প্রযোজ্য হবে বা আদৌ কোনো ফি থাকবে কিনা, তা নির্ভর করবে স্থানীয় ব্যাংক এবং গুগল পেমেন্ট নীতিমালার উপর। সাধারণত, স্থানীয় মুদ্রায় দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ লেনদেনের জন্য ব্যবহারকারীদের কোনো ফি দিতে হয় না।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

অবশেষে বাংলাদেশে চালু হচ্ছে গুগল পে

আপডেট সময় ০২:৩৭:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

বহুল প্রতীক্ষিত গুগল পে অবশেষে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে! আগামী এক মাসের মধ্যেই এই জনপ্রিয় ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা দেশে কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর ফলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের ডিভাইসকেই একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন, যা দৈনন্দিন লেনদেনে আনবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

গুগল পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে, সিটি ব্যাংকের গ্রাহকরা তাদের ভিসা ও মাস্টারকার্ড (স্থানীয় মুদ্রায়) গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত করে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও এই সেবার আওতায় আনা হবে।

এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সমর্থিত পেমেন্ট টার্মিনালে নিজেদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে সহজেই ‘ট্যাপ অ্যান্ড পে’ পদ্ধতিতে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। এর ফলে কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, সিনেমার টিকিট কেনা কিংবা যাত্রা—সব ক্ষেত্রেই আর পকেটে একাধিক প্লাস্টিক কার্ড বা নগদ টাকা বহন করার প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

গুগল পে মূলত একটি ডিজিটাল ওয়ালেট, এটি ব্যবহারকারীর আর্থিক তথ্য সরাসরি নিজেদের সার্ভারে সংরক্ষণ করে না, বরং লেনদেন সম্পন্ন হয় ব্যবহারকারীর নিজ নিজ ব্যাংকের মাধ্যমে।

এ কারণে সেবাটি চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি অনুমোদনের প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

এটি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করে এবং দ্রুত ও সহজে লেনদেনের সুযোগ করে দেয়।

গুগল পের প্রধান সুবিধাগুলো হলো:

সহজ ও দ্রুত লেনদেন: গুগল পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর গতি এবং ব্যবহারের সহজতা। এনএফসি (NFC) প্রযুক্তির মাধ্যমে পেমেন্ট টার্মিনালে শুধু ফোন ট্যাপ করেই পেমেন্ট করা যায়। অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রেও বার বার কার্ডের তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

নিরাপত্তা: গুগল পে একাধিক স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে। আপনার কার্ডের আসল নম্বর ব্যবসায়ীর সাথে শেয়ার না করে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্যবহার করা হয়, যাকে টোকেনাইজেশন বলে। এছাড়াও, ফোনে স্ক্রিন লক (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা পিন) থাকলে সেটি অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর হিসেবে কাজ করে।

একাধিক কার্ড এক জায়গায়: মানিব্যাগে একাধিক কার্ড নিয়ে ঘোরার পরিবর্তে গুগল পেতে আপনি একাধিক ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড যুক্ত করে রাখতে পারবেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন।

 খরচের হিসাব রাখা সহজ: গুগল পে আপনার লেনদেনের ইতিহাস সংরক্ষণ করে, যা আপনাকে আপনার খরচের উপর নজর রাখতে সাহায্য করে।

 কন্টাক্টলেস পেমেন্ট: বিশেষ করে বর্তমান সময়ে, স্পর্শবিহীন লেনদেন একটি বড় সুবিধা।

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা পাঠানো: কিছু কিছু দেশে, ডেবিট কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠাতে কোনো ফি না লাগলেও, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা পাঠালে একটি ছোট শতাংশ ফি হিসেবে কাটা হতে পারে। এটি সাধারণত ১.৫% থেকে ৩% পর্যন্ত হতে পারে, তবে এটি দেশ ও ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা পাঠালে ২.৯% ফি প্রযোজ্য হতে পারে।

বাংলাদেশে গুগল পে চালু হলে ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে ফি প্রযোজ্য হবে বা আদৌ কোনো ফি থাকবে কিনা, তা নির্ভর করবে স্থানীয় ব্যাংক এবং গুগল পেমেন্ট নীতিমালার উপর। সাধারণত, স্থানীয় মুদ্রায় দেশের অভ্যন্তরে সাধারণ লেনদেনের জন্য ব্যবহারকারীদের কোনো ফি দিতে হয় না।