ঢাকা ০১:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

ইয়াবাসহ গ্রেফতার তিন পুলিশ ও আনসার সদস্য কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০১:২৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / ২৬০ বার পড়া হয়েছে

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বগুড়ায় ৮৫০ ইয়াবাসহ তিন পুলিশ ও এক আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা।

গ্রেফতাররা হলেন বগুড়া পুলিশ লাইনসে কর্মরত নায়েক আব্দুল আলীম (৩৩), জয়পুরহাট সদর ট্রাফিকে কর্মরত কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) আব্দুল ওয়াহাব (৪০) এবং শফিপুর আনসার একাডেমির ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান (৪২)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জানতে পারে শহরের সাতমাথা এলাকায় একাত্তর আবাসিক হোটেলের সামনে তিনজন ব্যক্তি ইয়াবা বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছালে সন্দেহভাজন তিনজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আটকের পর আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের ব্যাগ তল্লাশি করে ৭০০টি ইয়াবা জব্দ করা হয়।

এ সময় আবু সুফিয়ান গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন ও আব্দুল ওয়াহাব ইয়াবা বিক্রি করে বিকাশে টাকা নেন। পরে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেনের বিকাশ নম্বর চেক করে ২৭ হাজার টাকার লেনদেন দেখা যায়।

তারা আরও জানান, বগুড়ায় কর্মরত পুলিশের নায়েক আব্দুল আলীম তাদের কাছ থেকে কিছুক্ষণ আগে ১৫০টি ইয়াবা কিনে নিয়ে গেছেন। পরে তাকে শহরের নবাববাড়ী সড়কের পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে আটক করা হয়। তার হাতে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ১৫০টি ইয়াবা পাওয়া যায়।

আটক চারজনের মধ্যে নায়েক আব্দুল আলীমকে তাৎক্ষণিক বগুড়া পুলিশ লাইনস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অপর তিনজনকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মাটিডালী এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে গোয়েন্দা পুলিশ নায়েক আব্দুল আলীমকে আটক করে। পরে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে চারজনের নামে সদর থানায় একটি মামলা করেন।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, আব্দুল ওয়াহাব ও আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায়। নায়েক আব্দুল আলীমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়।

তিনি বলেন, আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান বিগত সরকারের আমলে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাসভবনে ডিউটি করতেন, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন বঙ্গভবনে ডিউটি করতেন। অপর দুজন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তারা একে অপরের সঙ্গে পূর্বপরিচিত এবং ঢাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাঁচ আগস্টের পর চারজন চার জেলায় বদলি হলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল এবং তারা মাদক কারবার করতেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাদের অপরাধের দায় বাহিনী নেবে না। তাদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইয়াবাসহ গ্রেফতার তিন পুলিশ ও আনসার সদস্য কারাগারে

আপডেট সময় ০১:২৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বগুড়ায় ৮৫০ ইয়াবাসহ তিন পুলিশ ও এক আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা।

গ্রেফতাররা হলেন বগুড়া পুলিশ লাইনসে কর্মরত নায়েক আব্দুল আলীম (৩৩), জয়পুরহাট সদর ট্রাফিকে কর্মরত কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) আব্দুল ওয়াহাব (৪০) এবং শফিপুর আনসার একাডেমির ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান (৪২)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জানতে পারে শহরের সাতমাথা এলাকায় একাত্তর আবাসিক হোটেলের সামনে তিনজন ব্যক্তি ইয়াবা বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছালে সন্দেহভাজন তিনজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আটকের পর আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের ব্যাগ তল্লাশি করে ৭০০টি ইয়াবা জব্দ করা হয়।

এ সময় আবু সুফিয়ান গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন ও আব্দুল ওয়াহাব ইয়াবা বিক্রি করে বিকাশে টাকা নেন। পরে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেনের বিকাশ নম্বর চেক করে ২৭ হাজার টাকার লেনদেন দেখা যায়।

তারা আরও জানান, বগুড়ায় কর্মরত পুলিশের নায়েক আব্দুল আলীম তাদের কাছ থেকে কিছুক্ষণ আগে ১৫০টি ইয়াবা কিনে নিয়ে গেছেন। পরে তাকে শহরের নবাববাড়ী সড়কের পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে আটক করা হয়। তার হাতে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ১৫০টি ইয়াবা পাওয়া যায়।

আটক চারজনের মধ্যে নায়েক আব্দুল আলীমকে তাৎক্ষণিক বগুড়া পুলিশ লাইনস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অপর তিনজনকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মাটিডালী এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে গোয়েন্দা পুলিশ নায়েক আব্দুল আলীমকে আটক করে। পরে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে চারজনের নামে সদর থানায় একটি মামলা করেন।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, আব্দুল ওয়াহাব ও আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায়। নায়েক আব্দুল আলীমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়।

তিনি বলেন, আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান বিগত সরকারের আমলে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাসভবনে ডিউটি করতেন, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন বঙ্গভবনে ডিউটি করতেন। অপর দুজন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তারা একে অপরের সঙ্গে পূর্বপরিচিত এবং ঢাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাঁচ আগস্টের পর চারজন চার জেলায় বদলি হলেও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল এবং তারা মাদক কারবার করতেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাদের অপরাধের দায় বাহিনী নেবে না। তাদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।