তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস চরম ঝুঁকিতে

- আপডেট সময় ১২:৩০:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ২৫২ বার পড়া হয়েছে
ইসরায়েলের টানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উত্তাল ইরান। আর এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই চরম ঝুঁকিতে পড়েছে তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস।
ইসরায়েলের নিশানায় রয়েছে তেহরান ইউনিভার্সিটির পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র। আর এই কেন্দ্র থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত আমাদের দূতাবাস ভবন। ফলে যে কোনো মুহূর্তে মারাত্মক বিপদের আশঙ্কা করছেন তেহরান মিশনে কর্মরত কূটনীতিকরা।
বিদেশ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু শহরের বাইরে নিরাপদ আবাসস্থল খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ, তেহরান এখন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
তেহরানে বাংলাদেশ মিশন জানিয়েছে, দূতাবাসের আশেপাশে রয়েছে আরও দুটি স্পর্শকাতর অবকাঠামো—যেগুলো ইসরায়েলের মূল লক্ষ্যবস্তু। একটি পারমাণবিক স্থাপনা, অপরটি একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন আইটি সেন্টার। এই দুটোতেই ইসরায়েলের বারবার হামলার চেষ্টা চলছে। আর এ কারণে পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে প্রাণহানির ভয়াবহ শঙ্কা।
এই মুহূর্তে দূতাবাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্য রয়েছেন। এছাড়া রেডিও তেহরানে কর্মরত আরও ২৭ জন, তেহরানে বসবাসরত শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীসহ শতাধিক বাংলাদেশি এখনো সেখানে অবস্থান করছেন।
গত ১৩ই জুন ২৮ জন বাংলাদেশির দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা আটকে পড়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রয়োজনে তাদের তৃতীয় কোনো দেশে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছেন প্রায় ৬০০ স্থায়ী বাংলাদেশি, যাদের অনেকে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে বসবাস করছেন। আরও প্রায় ৮০০ জন অবৈধভাবে কাজ করছেন বিভিন্ন খাতে। ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবী ও মানবপাচারের শিকার ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
এই সংকটময় সময়ে বাংলাদেশ সরকার সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। কোনো বাংলাদেশি বিপদে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এমনকি প্রয়োজন হলে দূতাবাসের কার্যক্রমই তৃতীয় দেশে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।