স্টারলিংককে বিটিআরসির সবুজ সংকেত, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর পথ খুললো

- আপডেট সময় ০১:৩৭:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
- / ২৮৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর অনুমোদন পেতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইলন মাস্কের স্টারলিংক। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ইতোমধ্যে লাইসেন্স ইস্যুর জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “আমরা গত সপ্তাহেই মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদন এলেই স্টারলিংককে নির্ধারিত ফি নিয়ে লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।”
নথি অনুযায়ী, স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেড গত ৭ এপ্রিল বিটিআরসির ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট সার্ভিসেস’ নির্দেশিকা অনুসারে আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত।
আবেদনের পর বিটিআরসি সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে, যারা নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে লাইসেন্সের জন্য সুপারিশ দেয়। পরে দুই সদস্যের একটি দল স্টারলিংকের অফিস পরিদর্শন করে এবং একই মত দেয়। বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এত দ্রুত সুপারিশ দেওয়ার ঘটনা এ ধরনের লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় এই প্রথম।
এর আগে, গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস স্টারলিংকের বাণিজ্যিক উদ্বোধন ৯০ দিনের মধ্যে নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
স্টারলিংক ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিটিআরসি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার জন্য নির্দেশিকা তৈরির অনুমোদন দেয়। চূড়ান্ত নির্দেশিকা জারি হয় ২০২৪ সালের মার্চে। এরই মধ্যে ২৯ মার্চ স্টারলিংক বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) থেকে দেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর ছাড়পত্র পেয়েছে।
বিশ্বজুড়ে স্টারলিংক বর্তমানে ৬,০০০-এর বেশি স্যাটেলাইট পরিচালনা করছে এবং ৩ মিলিয়নের বেশি গ্রাহককে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি দুর্গম ও অবকাঠামো-সংকটাপন্ন এলাকায় উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে বিশেষ দক্ষ।
তবে বাজারে তাদের প্রতিযোগীও কম নয়। অ্যামাজনের প্রজেক্ট কুইপার, ওয়ানওয়েব এবং টেলিস্যাটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও লো-আর্থ-অরবিট স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করছে।
মূল্য নির্ধারণে বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়; যুক্তরাষ্ট্রে স্টারলিংকের মাসিক চার্জ প্রায় ১২০ ডলার হলেও আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে তা ৩০-৪০ ডলারে ভর্তুকি দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে স্যাটেলাইট ডিশ ও রাউটারের মতো প্রাথমিক সরঞ্জামের খরচ ২০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে, যা অনেক গ্রাহকের জন্য বড় বাধা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের বাজারে স্টারলিংকের সাফল্য নির্ভর করবে সরকারের নীতিমালা, সেবা মূল্য এবং স্থানীয় বাস্তবতার ওপর।
সবকিছু ঠিকঠাক চললে, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললেই কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু হতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পথে এটি হতে পারে আরেকটি বড় মাইলফলক।