০৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

এপ্রিলের ডেঙ্গু চিত্র উদ্বেগজনক, মার্চের তুলনায় রোগী দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৪:১৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা মার্চের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত চার মাসে দেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, গত বছরের একই সময়ে সেই সংখ্যা অনেক কম ছিল।

এমনকি, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু সংক্রমণের বছর ২০২৩ এর প্রথম চার মাসের তুলনায়ও এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ মার্চ মাসের জরিপে দেখা যায়, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর লার্ভার উপস্থিতি কিছুটা বাড়লেও, সামগ্রিকভাবে আগের জরিপের তুলনায় লার্ভার পরিমাণ কমেছে।

তবে, এপ্রিল মাসজুড়ে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি ডেঙ্গুর লার্ভা বিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মে মাসেও একই ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা ডেঙ্গুর বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাদের মতে, এখনই যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২ জন। যেখানে গত বছরের প্রথম চার মাসে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫ জন।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে, পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

যদি শুধু এপ্রিল মাসের চিত্র দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত এপ্রিলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০১ জন, যা মার্চ মাসের ৩৩৬ জনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের সাথে এ বছরের তুলনামূলক চিত্র আরও উদ্বেগজনক। দেখা যাচ্ছে, এ বছর প্রতি মাসেই গত বছরের একই মাসের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত বছরের এপ্রিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৪ জন, যেখানে এ বছরের এপ্রিলে তা ৭১০ ছাড়িয়েছে। একইভাবে, গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১০৫, ৩৩৯ ও ৩১১ জন, যেখানে এ বছর এই তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৬১, ৩৭৪ ও ৩৩৬ জন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিছক সংখ্যা দিয়ে রোগের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাবের সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া না গেলেও, এই সংখ্যা নিঃসন্দেহে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে, যা একটি খারাপ লক্ষণ। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ না হলেও, এর কার্যকর ব্যবস্থাপনা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বর্ষাকালে সংক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

এপ্রিলের ডেঙ্গু চিত্র উদ্বেগজনক, মার্চের তুলনায় রোগী দ্বিগুণ

আপডেট সময় ০৪:১৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা মার্চের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত চার মাসে দেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, গত বছরের একই সময়ে সেই সংখ্যা অনেক কম ছিল।

এমনকি, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু সংক্রমণের বছর ২০২৩ এর প্রথম চার মাসের তুলনায়ও এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ মার্চ মাসের জরিপে দেখা যায়, ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর লার্ভার উপস্থিতি কিছুটা বাড়লেও, সামগ্রিকভাবে আগের জরিপের তুলনায় লার্ভার পরিমাণ কমেছে।

তবে, এপ্রিল মাসজুড়ে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি ডেঙ্গুর লার্ভা বিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মে মাসেও একই ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা ডেঙ্গুর বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাদের মতে, এখনই যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২ জন। যেখানে গত বছরের প্রথম চার মাসে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫ জন।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে, পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

যদি শুধু এপ্রিল মাসের চিত্র দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত এপ্রিলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০১ জন, যা মার্চ মাসের ৩৩৬ জনের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের সাথে এ বছরের তুলনামূলক চিত্র আরও উদ্বেগজনক। দেখা যাচ্ছে, এ বছর প্রতি মাসেই গত বছরের একই মাসের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত বছরের এপ্রিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৪ জন, যেখানে এ বছরের এপ্রিলে তা ৭১০ ছাড়িয়েছে। একইভাবে, গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১০৫, ৩৩৯ ও ৩১১ জন, যেখানে এ বছর এই তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৬১, ৩৭৪ ও ৩৩৬ জন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিছক সংখ্যা দিয়ে রোগের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাবের সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া না গেলেও, এই সংখ্যা নিঃসন্দেহে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে, যা একটি খারাপ লক্ষণ। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ না হলেও, এর কার্যকর ব্যবস্থাপনা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বর্ষাকালে সংক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।