সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে আইএসপিআর

- আপডেট সময় ১১:১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
- / ২৫২ বার পড়া হয়েছে
জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে এ তালিকার তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় জুলাই-আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়।
ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানায় হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়।
এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল।
আইএসপিআর জানায়, এ পরিপ্রেক্ষিতে, ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, পাঁচ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজনসহ (স্ত্রী ও শিশু) সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।
সে সময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনরক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয়গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ১/২ দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে পাঁচজনকে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যাপারে গত বছরের ১৮ আগস্ট আইএসপিআরের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং একইদিনে ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এসব ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবনরক্ষার্থে সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।
তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে, জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয়গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্যসহ) এই বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো।
এমতাবস্থায়, সবাইকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।