১৬ লাখ টাকার ষাঁড় ‘রাজা বিক্রমপুর’! কে কিনবেন কোরবানির এই সুপারস্টার?

- আপডেট সময় ০২:৪১:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- / ২৬৭ বার পড়া হয়েছে
কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। এবার হাটে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে এক বিশালদেহী ষাঁড় – নাম তার ‘রাজা বিক্রমপুর’। নামেই যার পরিচয়, এই ষাঁড়টি বেলজিয়াম ব্লু জাতের। এর ওজন প্রায় ১২৬০ কেজি! আর এই বিশালদেহী ‘রাজা বিক্রমপুরের’ দাম হাঁকা হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা।
পদ্মাপাড়ের মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার সাতঘরিয়ায় অবস্থিত ডাচ ডেইলি ফার্মে পরম যত্নে বেড়ে উঠেছে এই ষাঁড়টি। খামারিদের দাবি, এটিই এ বছর বেলজিয়াম ব্লু জাতের সবচেয়ে বড় ষাঁড়। বিদেশি জাতের হলেও, সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার আর অর্গানিক পদ্ধতিতে এটিকে পালন করা হয়েছে।
খামারে ‘রাজা বিক্রমপুরের’ দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মী মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “আমরা একেবারে বাচ্চা বয়স থেকে ‘রাজা বিক্রমপুরকে’ লালন-পালন করছি। কোনো প্রকার হরমোন বা কৃত্রিম কিছু খাওয়ানো হয়নি।
ঘাস, খৈল, ভুসি আর ভুট্টা – সব দেশীয় খাবারেই গরুটি বড় হয়েছে। মানুষ যেমন স্নেহে আর যত্নে সন্তান বড় করে, তেমনি আমরাও তাকে বড় করেছি।” ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তফা কামাল জানান, তাদের খামারে স্বাস্থ্যবিধি ও পশুর সুরক্ষায় কঠোর নজরদারি রাখা হয়।
‘রাজা বিক্রমপুরের’ মতো পশুগুলো নিয়মিত তাদের তত্ত্বাবধানে থাকে। শুধু আকারে বড় হলেই চলবে না, এদের সুস্থতা, সঠিক বয়স, রোগমুক্ত অবস্থা নিশ্চিত করাটাই মূল বিষয়।
ডা. মোস্তফা কামাল আরও বলেন, তারা এই কোরবানির ঈদে তিনটি ক্যাটাগরিতে পশু বিক্রি করছেন। যেগুলোর ওজন ৪০০ কেজির মধ্যে আছে, সেগুলো ৫৭০ টাকা লাইভ ওজনে বিক্রি হচ্ছে। ৪০০-৫০০ কেজি ওজনের পশুগুলো ৬০০ টাকা কেজি দরে, আর যেগুলো ৫০০ কেজির ওপরে, সেগুলো ঠিকা হিসেবে বিক্রি করছেন।
তাদের এই খামারের বিশেষত্ব হলো, তারা গরু লালন-পালনের জন্য তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন: জেনেটিক, কাউ কমফোর্ট ও নিউট্রিশন। এই তিনটি বিষয় সমন্বয় করেই গরু পালন করা হয়। তাদের খামারে সার্বক্ষণিক তিনজন চিকিৎসক কাজ করেন, যা তাদের গরুগুলোকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, কোরবানির জন্য জেলায় এ বছর ৬৯ হাজার ৭৭০টি পশুর চাহিদা রয়েছে, বিপরীতে প্রস্তুত আছে ৮১ হাজার ৭৭৫টি পশু। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৫৯ হাজার ৮৭৭টি।
ঐতিহ্যবাহী মিরকাদিমের প্রায় ২০০টি ধবল গাইও এর মধ্যে রয়েছে। খামার মালিক ও কর্মীরা জানান, এই খামারে মোট দুই হাজার গরুর মধ্যে কোরবানির জন্য ৩০০টির বেশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বেলজিয়াম ব্লু ছাড়াও এখানে ইউরোপীয় লিমোজিন, পাকিস্তানি শাহীওয়াল, ব্রাজিলের ঘির, নেপালের গির, ভুটানের ভুট্রি, অস্ট্রেলিয়ান অলেস্ট্রিন ফিজিয়াম এবং দেশি রেডচিটাগাং ও মিরকাদিমের ধবল গাইয়ের মতো নানান জাতের গরু রয়েছে।