ঢাকা ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫

৫৪ বছর পর আপেল মাহমুদকে প্রমাণ করতে হলো তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • / ২৭২ বার পড়া হয়েছে

একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগীতশিল্পী আপেল মাহমুদ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর তাকে নতুন করে প্রমাণ করতে হলো তিনি মুক্তিযোদ্ধা। ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি…’—এই কালজয়ী গানের সুরকার ও গায়ক আপেল মাহমুদ। মুক্তিযুদ্ধে তার গান সৈনিকদের প্রেরণা জুগিয়েছে।

কিন্তু সম্প্রতি তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তাকে নোটিশ পাঠায়।  সোমবার (২ জুন) কুমিল্লা সার্কিট হাউসে শুনানিতে হাজির হয়ে আপেল মাহমুদ প্রমাণ করেন, তিনি শুধু গান গাননি, অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনেও লড়েছেন।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা আপেল মাহমুদ ১৯৭১ সালে তিন নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের নেতৃত্বে নরসিংদী, আশুগঞ্জ, ভৈরব, হবিগঞ্জ ও তেলিয়াপাড়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। আশুগঞ্জের যুদ্ধে তার বাঁ চোখের পাশে আঘাত লাগে। পরে তাকে আগরতলায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরপর তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেন।

জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, “আপেল মাহমুদ কাগজপত্রে প্রমাণ করেছেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শুধু গান গিয়ে নয়, রণাঙ্গনেও লড়েছেন।” শুনানিতে জামুকা নিশ্চিত করে তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়।

আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন। জামুকা জানায়, কুমিল্লা জেলার ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি হয়েছে। আপেল মাহমুদ বলেন, “জীবিত থেকে দ্বিতীয়বার প্রমাণ করতে হলো আমি মুক্তিযোদ্ধা। জামুকার সদস্যরা এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”

তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, একজন প্রখ্যাত শিল্পীও। ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’—এর মতো গানে তিনি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। ২০০৫ সালে সংগীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক পান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

৫৪ বছর পর আপেল মাহমুদকে প্রমাণ করতে হলো তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

আপডেট সময় ১২:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগীতশিল্পী আপেল মাহমুদ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর তাকে নতুন করে প্রমাণ করতে হলো তিনি মুক্তিযোদ্ধা। ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি…’—এই কালজয়ী গানের সুরকার ও গায়ক আপেল মাহমুদ। মুক্তিযুদ্ধে তার গান সৈনিকদের প্রেরণা জুগিয়েছে।

কিন্তু সম্প্রতি তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তাকে নোটিশ পাঠায়।  সোমবার (২ জুন) কুমিল্লা সার্কিট হাউসে শুনানিতে হাজির হয়ে আপেল মাহমুদ প্রমাণ করেন, তিনি শুধু গান গাননি, অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনেও লড়েছেন।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা আপেল মাহমুদ ১৯৭১ সালে তিন নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের নেতৃত্বে নরসিংদী, আশুগঞ্জ, ভৈরব, হবিগঞ্জ ও তেলিয়াপাড়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। আশুগঞ্জের যুদ্ধে তার বাঁ চোখের পাশে আঘাত লাগে। পরে তাকে আগরতলায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরপর তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেন।

জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, “আপেল মাহমুদ কাগজপত্রে প্রমাণ করেছেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শুধু গান গিয়ে নয়, রণাঙ্গনেও লড়েছেন।” শুনানিতে জামুকা নিশ্চিত করে তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়।

আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন। জামুকা জানায়, কুমিল্লা জেলার ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি হয়েছে। আপেল মাহমুদ বলেন, “জীবিত থেকে দ্বিতীয়বার প্রমাণ করতে হলো আমি মুক্তিযোদ্ধা। জামুকার সদস্যরা এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”

তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, একজন প্রখ্যাত শিল্পীও। ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’—এর মতো গানে তিনি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। ২০০৫ সালে সংগীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক পান।