ঢাকা ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

৪০৪ উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় ও খরচে নিষেধাজ্ঞা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০২:১৯:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ৪০৪টি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় ও খরচের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। কিন্তু মেয়াদ বৃদ্ধি বা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এনইসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফলে এই প্রকল্পগুলো ‘তারকা’ চিহ্ন দিয়ে আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) যুক্ত করা হয়েছে। এতে নতুন এডিপির ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে এবং প্রকল্পগুলোর ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে যুক্ত হওয়া মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটি হলো-ঘোড়াশাল-৩ রিপাওয়ারিং প্রজেক্ট। এটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। প্রায় ১০ বছর ধরে চলমান থাকলেও শেষ হওয়ার নাম নেই।

এছাড়া ময়মনসিংহ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য ধনুয়া হতে ময়মনসিংহ পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ। এটি ২০২২ সালের জুলাই থেকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নে লক্ষ্য ছিল।

আরও আছে, বিআরটির জন্য সিএনজি একতলা এসিবাস সংগ্রহ প্রকল্প ২০২৩ সালে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণ রয়েছে। কিন্তু এখনো কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামক স্থানে নবগঙ্গা নদীতে কালিয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শুরু হয়ে আগামী জুনে শেষ হওয়া কথা। কিন্তু এখনো এটি সংশোধন বা মেয়াদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলমান। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) প্রকল্পটি ২০১৭ সালের মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

থানচি-রিমাকরি-মদক-লিকরি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে। একই অবস্থা নলকা-সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পেও।

এছাড়া অর্থছাড় ও খরচ স্থগিত হওয়া আরও কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে-সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রজেক্ট, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় লেভেলক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নীতকরণ এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও আছে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি এবং ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ নির্মাণ। আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরকরণ। রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন প্রকল্প।

পরিকল্পনা কমিশনের মতে, মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাস এই প্রকল্পগুলোর টাকা ছাড় বা ব্যয় করা যায় না, যা আর্থিক শৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর। গত অর্থবছরেও ৩৯৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকল্প এডিপিতে বোঝা হয়ে ছিল। এই সংকট সমাধানে সরকার এখন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

৪০৪ উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় ও খরচে নিষেধাজ্ঞা!

আপডেট সময় ০২:১৯:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) ৪০৪টি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় ও খরচের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। কিন্তু মেয়াদ বৃদ্ধি বা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এনইসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফলে এই প্রকল্পগুলো ‘তারকা’ চিহ্ন দিয়ে আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) যুক্ত করা হয়েছে। এতে নতুন এডিপির ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে এবং প্রকল্পগুলোর ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে যুক্ত হওয়া মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটি হলো-ঘোড়াশাল-৩ রিপাওয়ারিং প্রজেক্ট। এটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। প্রায় ১০ বছর ধরে চলমান থাকলেও শেষ হওয়ার নাম নেই।

এছাড়া ময়মনসিংহ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য ধনুয়া হতে ময়মনসিংহ পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ। এটি ২০২২ সালের জুলাই থেকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়নে লক্ষ্য ছিল।

আরও আছে, বিআরটির জন্য সিএনজি একতলা এসিবাস সংগ্রহ প্রকল্প ২০২৩ সালে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণ রয়েছে। কিন্তু এখনো কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামক স্থানে নবগঙ্গা নদীতে কালিয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালে শুরু হয়ে আগামী জুনে শেষ হওয়া কথা। কিন্তু এখনো এটি সংশোধন বা মেয়াদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলমান। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ জোন) প্রকল্পটি ২০১৭ সালের মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

থানচি-রিমাকরি-মদক-লিকরি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়েছে। একই অবস্থা নলকা-সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পেও।

এছাড়া অর্থছাড় ও খরচ স্থগিত হওয়া আরও কয়েকটি প্রকল্প হচ্ছে-সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রজেক্ট, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় লেভেলক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নীতকরণ এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন প্রকল্প।

আরও আছে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি এবং ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ নির্মাণ। আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরকরণ। রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন প্রকল্প।

পরিকল্পনা কমিশনের মতে, মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় অর্থবছরের প্রথম কয়েক মাস এই প্রকল্পগুলোর টাকা ছাড় বা ব্যয় করা যায় না, যা আর্থিক শৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর। গত অর্থবছরেও ৩৯৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকল্প এডিপিতে বোঝা হয়ে ছিল। এই সংকট সমাধানে সরকার এখন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।