০২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

রমজানে লোডশেডিং কম হওয়ায় নসরুল হামিদের সমালোচনা , তুললেন চুরির অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:১১:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। রমজান মাসে তুলনামূলকভাবে কম লোডশেডিং হওয়ায় তিনি প্রতিমন্ত্রীকে সরাসরি চোর বলে অভিযুক্ত করেছেন এবং বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ব্যক্তিগত লাভের অভিযোগ তুলেছেন।

শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাজমুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদেরও সমালোচনা করেন।

পোস্টে সিদ্দিকী নাজমুল আলম লেখেন, যারা দলের ক্ষতি করেছে এবং রাজনীতিকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে লিখলেই কিছু লোকের গায়ে জ্বালা ধরে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি গোষ্ঠী চায় তাদের পক্ষে লিখে তাদের সব অপকর্মকে বৈধতা দিতে।

নাজমুল আলম আরও লেখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নতি করেছেন। তবে তাদের সরকারের আমলের তুলনায় এবারের রমজানে লোডশেডিং তেমন না হওয়ায় তিনি প্রশ্ন তোলেন। তার মতে, এর অর্থ হলো বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং কিছু দুর্নীতিবাজ আমলার যোগসাজশে কৃত্রিম লোডশেডিং তৈরি করা হতো। এর মাধ্যমে তারা তাদের পছন্দের পাওয়ার প্লান্ট ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দিয়ে কমিশন হাতিয়ে নিতেন।

তিনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে ‘বিপু’ নামে উল্লেখ করে তাকে ‘সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ চোর’ আখ্যা দেন এবং তার পরিবারকেও চোর বলে মন্তব্য করেন। নাজমুল আলম অভিযোগ করেন, গত ১০ বছরে প্রতিমন্ত্রীর বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখে মনে হয় তিনি রাজা এবং সাধারণ জনগণ প্রজা। তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিমন্ত্রীর ব্যবসায় বিএনপি-জামাতের নেতারা অংশীদার।

নাজমুল আলম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, প্রতিমন্ত্রীর দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে রাজনীতি রাজপথ থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে এবং ছাত্র-যুবকদের কাছ থেকে কর্পোরেটদের হাতে চলে গেছে।

তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা এখন ফিলিস্তিনিদের জন্য আবাবিল পাখির মতো অথবা দেশের বাইরে থেকে কোনো শক্তিশালী শক্তির সাহায্যের অপেক্ষায় আছে।

স্থানীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে নাজমুল আলম বলেন, এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর কোনো প্রভাব নেই এবং সেখানে শাহীন চেয়ারম্যান অত্যন্ত জনপ্রিয়। অথচ শাহীন চেয়ারম্যানের মতো পুরনো নেতাকে বাদ দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীকে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

নাজমুল আলম আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিমন্ত্রী তার সন্তানদের বিলাসবহুল জীবন দিলেও সাধারণ কর্মীরা তাদের সন্তানদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, সরকারি দলে থেকেও তিনি সমালোচনা করেছেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন ও থাকবেন।

নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, যতদিন শেখ হাসিনা জীবিত থাকবেন, ততদিন তিনি রাজনীতি করার চেষ্টা করবেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অনেককেই কেনা সম্ভব।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

রমজানে লোডশেডিং কম হওয়ায় নসরুল হামিদের সমালোচনা , তুললেন চুরির অভিযোগ

আপডেট সময় ০২:১১:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। রমজান মাসে তুলনামূলকভাবে কম লোডশেডিং হওয়ায় তিনি প্রতিমন্ত্রীকে সরাসরি চোর বলে অভিযুক্ত করেছেন এবং বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ব্যক্তিগত লাভের অভিযোগ তুলেছেন।

শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাজমুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদেরও সমালোচনা করেন।

পোস্টে সিদ্দিকী নাজমুল আলম লেখেন, যারা দলের ক্ষতি করেছে এবং রাজনীতিকে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে লিখলেই কিছু লোকের গায়ে জ্বালা ধরে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি গোষ্ঠী চায় তাদের পক্ষে লিখে তাদের সব অপকর্মকে বৈধতা দিতে।

নাজমুল আলম আরও লেখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নতি করেছেন। তবে তাদের সরকারের আমলের তুলনায় এবারের রমজানে লোডশেডিং তেমন না হওয়ায় তিনি প্রশ্ন তোলেন। তার মতে, এর অর্থ হলো বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং কিছু দুর্নীতিবাজ আমলার যোগসাজশে কৃত্রিম লোডশেডিং তৈরি করা হতো। এর মাধ্যমে তারা তাদের পছন্দের পাওয়ার প্লান্ট ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দিয়ে কমিশন হাতিয়ে নিতেন।

তিনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে ‘বিপু’ নামে উল্লেখ করে তাকে ‘সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ চোর’ আখ্যা দেন এবং তার পরিবারকেও চোর বলে মন্তব্য করেন। নাজমুল আলম অভিযোগ করেন, গত ১০ বছরে প্রতিমন্ত্রীর বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখে মনে হয় তিনি রাজা এবং সাধারণ জনগণ প্রজা। তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিমন্ত্রীর ব্যবসায় বিএনপি-জামাতের নেতারা অংশীদার।

নাজমুল আলম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, প্রতিমন্ত্রীর দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে রাজনীতি রাজপথ থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে এবং ছাত্র-যুবকদের কাছ থেকে কর্পোরেটদের হাতে চলে গেছে।

তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরা এখন ফিলিস্তিনিদের জন্য আবাবিল পাখির মতো অথবা দেশের বাইরে থেকে কোনো শক্তিশালী শক্তির সাহায্যের অপেক্ষায় আছে।

স্থানীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে নাজমুল আলম বলেন, এলাকায় প্রতিমন্ত্রীর কোনো প্রভাব নেই এবং সেখানে শাহীন চেয়ারম্যান অত্যন্ত জনপ্রিয়। অথচ শাহীন চেয়ারম্যানের মতো পুরনো নেতাকে বাদ দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীকে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

নাজমুল আলম আক্ষেপ করে বলেন, প্রতিমন্ত্রী তার সন্তানদের বিলাসবহুল জীবন দিলেও সাধারণ কর্মীরা তাদের সন্তানদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, সরকারি দলে থেকেও তিনি সমালোচনা করেছেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন ও থাকবেন।

নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, যতদিন শেখ হাসিনা জীবিত থাকবেন, ততদিন তিনি রাজনীতি করার চেষ্টা করবেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অনেককেই কেনা সম্ভব।