চট্টগ্রাম টেস্ট
সকালেই তাইজুলের আঘাত, কোনো রান না করেই অলআউট জিম্বাবুয়ে

- আপডেট সময় ১১:৪৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে সফরকারী জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিল ৯০ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২২৭ রান করে। কিন্তু মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দ্বিতীয় দিনে শেষ উইকেটে আর কোনো রান করতে দেয়নি বাংলাদেশ। এতে ক্রেইগ আরবিনের দলকে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করেই থামতে হয়। গতকাল পাঁচ উইকেট নেওয়া স্পিনার তাইজুল ইসলাম দিনের প্রথম বলেই ব্লেসিং মুজারানিকে আউট করে দিয়েছেন। জিম্বাবুয়ে ব্যাটার উইকেটরক্ষক জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন।
আম্পায়ার প্রথম আউট দিতে না চাইলেও বাংলাদেশি ফিল্ডারদের কড়া আবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত বদল করেন। ৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে তাইজুল ইসলাম ইনিংসটিকে স্মরণীয় করে রাখলেন।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিল শুরুর দিকেই জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরবে। তবে সেটি পারেনি স্বাগতিকরা। প্রথম উইকেটের দেখা মিলে ইনিংসের দশম ওভারে। সদ্য অভিষেক হওয়া পেসার তানজিম হাসান সাকিব ইনিংসের ১১ তম ওভারের তৃতীয় বলে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন। জিম্বাবুয়ে ওপেনার ব্রায়ান বেনেটকে (৩৩ বলে ২১) অফসাইডে এক্সট্রা বাউন্স দিয়ে উইকেটরক্ষক জাকের আলী অনিকের ক্যাচ বানান তানজিম। জিম্বাবুয়ে প্রথম উইকেট হারায় ৪১ রানে।
তাইজুল ইসলাম চট্টগ্রামে বোলিংয়ে এসেই উইকেট পান। দুর্দান্ত এক ডেলিবারিতে ইনিংসের ১৯ তম ওভারে উইকেটে সেট হওয়া জিম্বাবুয়ে ওপেনার বেন কারেনকে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। কারেন ৫০ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান। পরে জিম্বাবুয়ে দলীয় ৭২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায়।
উইলিয়ামস ও নিকোলাস ওয়েলচ তৃতীয় উইকেটে ১০৫ রানের জুটি করে জিম্বাবুয়েকে অনেক দূর এগিয়ে দেন। অবশেষে সফরকারীদের জুটি ভেঙেছে নিকোলাস ওয়েলচ রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার ফলে। ৫৪ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। বল খেলেন ১৩১টি। জিম্বাবুয়ের দলীয় রান তখন ১৬২।
এরপর স্পিনার নাঈম হাসান নতুন ব্যাটার ক্রেইগ আরভিনকে আউট করেন। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ৩১ বলে মাত্র ৫ রান করে সাজঘরে ফেরত যান। আরভিনকে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর ক্যাচ বানান নাঈম।
জিম্বাবুয়ের স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতে না হতেই আবারও আঘাত হানেন নাঈম। ডানহাতি স্পিনার এবার আউট করেন শন উইলিয়ামসকে। জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ব্যাটার উইলিয়ামস ১৬৬ বলে ৬৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন। জিম্বাবুয়ে ১৭৮ রানে ৪ উইকেট হারায়।
এরপর ওয়েসলে মাদভেরে সেট হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাইজুলের ঘূর্ণিতে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। মাত্র ৩২ বলে ১৫ রান করে তাইজুলের শিকার হন তিনি। তবে উইকেটের পেছনে যাওয়া বল গ্লাভসে নিতে পারেনি উইকেটরক্ষক জাকের আলী। বল বুকে চেপে আটকে রেখে মাদভেরেকে আউট করেন। এক ওভার পর তাইজুল নেন আরেক উইকেট।
তাইজুলকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। সেটাই যেন বিপদ ডেকে আনে জিম্বাবুয়ের। পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন লোয়ার অর্ডার এই ব্যাটার। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি। সম্বল মাত্র ঐ একটি ছক্কাই। ওই ওভারে (দলীয় ৮১তম) ঠিক পরের বলে শূন্য রানে বোল্ড হন রিচার্ড এনগারাভা (০)।
মিরাজের থ্রোতে ননস্ট্রাইকে থাকা ভিনসেন্ট মাসেকেসা (৮) রানআউট হন। অষ্টম উইকেট পতনের পর মাঠে আসেন রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া নিক ওয়েলচ। কিন্তু এবার আর টিকতে পারেননি তিনি। তাইজুলের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওয়েলচ (৫৪)।
বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম ৬০ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছেন। এটি বাঁহাতি স্পিনারের ১৬তম ফাইফার। এছাড়া নাঈম হাসান ২ ও তানজিম সাকিব নেন ১ উইকেট।