০১:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় এক দিনে নিহত ৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৭:৫৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৫ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) দিনভর হামলায় নিহত হয়েছেন ৫১ জন। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওয়াফা নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথম হামলার ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে। এতে নিহত হন ৯ জন, এর কাছাকাছি সময়ে খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালায় আইএএফ। এতে নিহত হন চারজন।

গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে ৯ জন শহরের মধ্যাঞ্চল, তিনজন দক্ষিণ গাজা সিটি এবং সাতজন উত্তর গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে নিহত হন আরও ১০ জন। এছাড়া উত্তর গাজার বেইত লাহা উপশহরে নিহত হয়েছেন ৯ জন।

আইডিএফ ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে। সোমবারের অভিযানের পর গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৩০০ জন এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জন। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে । ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল; কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই জিম্মিদের মুক্তি ও তার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে অন্তরীণ ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেওয়া নিয়ে মতানৈক্য হওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ৩৮ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২০৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় এক দিনে নিহত ৫১

আপডেট সময় ০৭:৫৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) দিনভর হামলায় নিহত হয়েছেন ৫১ জন। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওয়াফা নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথম হামলার ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে। এতে নিহত হন ৯ জন, এর কাছাকাছি সময়ে খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালায় আইএএফ। এতে নিহত হন চারজন।

গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে ৯ জন শহরের মধ্যাঞ্চল, তিনজন দক্ষিণ গাজা সিটি এবং সাতজন উত্তর গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে নিহত হন আরও ১০ জন। এছাড়া উত্তর গাজার বেইত লাহা উপশহরে নিহত হয়েছেন ৯ জন।

আইডিএফ ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে। সোমবারের অভিযানের পর গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট নিহত ও আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৩০০ জন এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জন। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে । ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল; কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই জিম্মিদের মুক্তি ও তার বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে অন্তরীণ ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেওয়া নিয়ে মতানৈক্য হওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ৩৮ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২০৬০ জন এবং আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি