১০:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

পুলিশ ক্যাডারে অবিবাহিতদের নিয়োগের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৬:৫৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২ বার পড়া হয়েছে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান।

পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই বক্তব্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। র‍্যাব মহাপরিচালক পুলিশ ক্যাডার অর্থাৎ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে শুধুমাত্র অবিবাহিতদের নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পুলিশ সপ্তাহের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

এরপর বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্যরা তাদের দাবি ও প্রস্তাব প্রধান অতিথির কাছে তুলে ধরেন।

ঢাকা জেলার নারী পুলিশ কনস্টেবল সামিয়া স্বর্ণা তার বক্তব্যে এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ বাড়তি ভাতা দাবি করেন। অন্যদিকে, পুলিশ সদর দপ্তরের এএসপি মো. আল আসাদ পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের জোরালো দাবি জানান।

তিনি উল্লেখ করেন যে পুলিশ সংস্কার কমিশনে বিষয়টি সেভাবে আসেনি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে, একটি স্বাধীন ও প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনে এখনই এই কমিশন গঠন করা অপরিহার্য বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

এই অনুষ্ঠানেই র‍্যাবের ডিজি একেএম শহিদুর রহমান পুলিশ ক্যাডার বা এএসপি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

তিনি প্রস্তাব করেন যে, পুলিশ ক্যাডারে কাউকে সুপারিশ করার আগেই তার বৈবাহিক অবস্থা, শারীরিক সক্ষমতা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। বিশেষভাবে, তিনি অবিবাহিত প্রার্থীদের নিয়োগের উপর জোর দেন।

তিনি যুক্তি দেন যে, সাধারণত পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার পরেই প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শারীরিক উচ্চতা এবং ফিটনেস ইত্যাদি বিষয়গুলো যাচাই করা হয়। তার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো, নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই যেন প্রার্থীদের ব্যক্তিগত এবং শারীরিক বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়, যাতে পরবর্তীতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয়।

র‍্যাব ডিজি’র এই প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে বিবাহিত তরুণ-তরুণীরা প্রাথমিকভাবেই পুলিশ ক্যাডারে আবেদনের যোগ্যতা হারাতে পারেন।

অনেকের মতে, একজন প্রার্থীর বৈবাহিক অবস্থা তার কর্মদক্ষতা বা পেশাদারিত্বের মাপকাঠি হতে পারে না। বিবাহিত জীবন একজন ব্যক্তিকে আরও বেশি দায়িত্বশীল এবং স্থিতিশীল করতে পারে।

অন্যদিকে, প্রস্তাবের সমর্থকরা হয়তো মনে করতে পারেন যে, অবিবাহিত ব্যক্তিরা তাদের পেশাগত জীবনে আরও বেশি সময় ও মনোযোগ দিতে সক্ষম হবেন এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের চাপ কম থাকবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

পুলিশ ক্যাডারে অবিবাহিতদের নিয়োগের প্রস্তাব

আপডেট সময় ০৬:৫৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান।

পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই বক্তব্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। র‍্যাব মহাপরিচালক পুলিশ ক্যাডার অর্থাৎ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে শুধুমাত্র অবিবাহিতদের নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পুলিশ সপ্তাহের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

এরপর বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্যরা তাদের দাবি ও প্রস্তাব প্রধান অতিথির কাছে তুলে ধরেন।

ঢাকা জেলার নারী পুলিশ কনস্টেবল সামিয়া স্বর্ণা তার বক্তব্যে এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ বাড়তি ভাতা দাবি করেন। অন্যদিকে, পুলিশ সদর দপ্তরের এএসপি মো. আল আসাদ পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের জোরালো দাবি জানান।

তিনি উল্লেখ করেন যে পুলিশ সংস্কার কমিশনে বিষয়টি সেভাবে আসেনি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে, একটি স্বাধীন ও প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনে এখনই এই কমিশন গঠন করা অপরিহার্য বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

এই অনুষ্ঠানেই র‍্যাবের ডিজি একেএম শহিদুর রহমান পুলিশ ক্যাডার বা এএসপি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

তিনি প্রস্তাব করেন যে, পুলিশ ক্যাডারে কাউকে সুপারিশ করার আগেই তার বৈবাহিক অবস্থা, শারীরিক সক্ষমতা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। বিশেষভাবে, তিনি অবিবাহিত প্রার্থীদের নিয়োগের উপর জোর দেন।

তিনি যুক্তি দেন যে, সাধারণত পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার পরেই প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শারীরিক উচ্চতা এবং ফিটনেস ইত্যাদি বিষয়গুলো যাচাই করা হয়। তার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো, নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই যেন প্রার্থীদের ব্যক্তিগত এবং শারীরিক বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়, যাতে পরবর্তীতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয়।

র‍্যাব ডিজি’র এই প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে বিবাহিত তরুণ-তরুণীরা প্রাথমিকভাবেই পুলিশ ক্যাডারে আবেদনের যোগ্যতা হারাতে পারেন।

অনেকের মতে, একজন প্রার্থীর বৈবাহিক অবস্থা তার কর্মদক্ষতা বা পেশাদারিত্বের মাপকাঠি হতে পারে না। বিবাহিত জীবন একজন ব্যক্তিকে আরও বেশি দায়িত্বশীল এবং স্থিতিশীল করতে পারে।

অন্যদিকে, প্রস্তাবের সমর্থকরা হয়তো মনে করতে পারেন যে, অবিবাহিত ব্যক্তিরা তাদের পেশাগত জীবনে আরও বেশি সময় ও মনোযোগ দিতে সক্ষম হবেন এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের চাপ কম থাকবে।