এনসিপির লিগ্যাল নোটিশ
নারীকে বেশ্যা বলায় হেফাজত ইসলামের দুঃখ প্রকাশ

- আপডেট সময় ০৪:২৭:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
- / ২৫২ বার পড়া হয়েছে
হেফাজতে ইসলামের জনসভায় নারীকে বেশ্যা বলে অবমাননা করার অভিযোগে এনসিপিসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ছয় নারীর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর প্রেক্ষিতে সংগঠনটি বক্তব্য প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এছাড়া এসব আপত্তিকর বক্তব্য হেফাজত ইসলাম সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। তবে আলেম-ওলামাদের নিয়েও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী মঙ্গলবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৩ মে আমাদের মহাসমাবেশে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুজন বক্তা আপত্তিকর শব্দচয়ন করেছেন, যা আমরা সমর্থন করি না। কেউ এতে আহত হলে তাদের প্রতিও আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে সেক্যুলার প্রগতিশীল ঘরানার যারা এতোকাল আলেম-ওলামাকে বিদ্বেষমূলকভাবে ‘জঙ্গি’, ‘মৌলবাদী’, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ ও ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে কটাক্ষ করে এসেছেন, তাদেরও আমরা এ ধরনের আপত্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। শাপলা চত্বরের গণহত্যায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে কারা উৎসাহ দিয়েছিল তা আমরা ভুলে যাইনি।
তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি আমাদের ঘৃণার প্রশ্নই আসে না। মতাদর্শিক লড়াইকে ‘নারীর প্রতি ঘৃণা’ আকারে দেখাটা স্রেফ মুর্খতা। আমরা আবারও বলছি, যার যার ধর্মীয় বিধান অনুসারে নারীর ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আমরাও সংস্কার কাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী। কিন্তু শুরুতেই আলেম-ওলামা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিশেষজ্ঞকে বাদ দিয়ে একদল এনজিওবাজ নারীবাদীকে নিয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হলো। ফলে এমন একচেটিয়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সেক্যুলার প্রগতিশীল নারীসমাজের স্বার্থ ও মতাদর্শ রক্ষিত হলেও ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারীসমাজের ধর্মীয় চিন্তা ও বিবেচনা উপেক্ষিত হয়েছে। এই বৈষম্য মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উগ্র ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী কর্তৃক আমাদের ‘নারীবিদ্বেষী’ অপবাদ দেওয়ার অপরাজনীতি বহু পুরোনো। অথচ দেশজুড়ে আমাদের মহিলা কওমি মাদরাসাগুলোতে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে ছাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি বরাদ্দমুক্ত এসব মাদরাসায় সমাজের হাজার হাজার প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়ের জন্যও বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে এদেশের নারীদের সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে আমাদেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কখনো আলেম-ওলামার সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। আমাদের এই সামাজিক ভূমিকা ও ধর্মীয় অবস্থান আধুনিক ব্যবস্থায় এদেশের নারীকে ‘পণ্য’ বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্তরায় বলেই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে একদল উগ্র নারীবাদীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে মনে করি। কিন্তু ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে আমরা ছাড় দেব না।