চাঁদপুরে এক বছরে বিয়ে ১৪ হাজার, বিচ্ছেদ ৮ হাজার

- আপডেট সময় ০১:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / ২৫৯ বার পড়া হয়েছে
চাঁদপুর, প্রবাসী অধ্যুষিত একটি জেলা। এই জেলাটিতে বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের এক উদ্বেগজনক চিত্র উঠে এসেছে। গত এক বছরে এখানে সাড়ে ১৪ হাজার বিয়ে রেজিস্ট্রি হলেও, একই সময়ে প্রায় ৮ হাজার বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে।
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গড়ে প্রতিদিন ২১টি তালাকের ঘটনা ঘটছে, যার মধ্যে বিচ্ছেদের আবেদনকারী নারীদের সংখ্যাই বেশি। চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পরকীয়ার কারণে ঘর ছাড়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
শুধু তাই নয়, চাঁদপুরের আদালতে গত এক বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত ২৭৫৪টি মামলা বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া ৯৮৮টি মামলার অধিকাংশই তালাকের মাধ্যমে শেষ হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন থানা সূত্রে জানা যায়, পরকীয়া এবং পারিবারিক কলহের জেরে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, যাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। তালাকের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে নারী বা পুরুষের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, পারিবারিক বন্ধনের অভাব এবং যৌন অক্ষমতা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার একজন বাসিন্দা জানান, এই এলাকা প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় বিয়ের পর পুরুষরা বিদেশে চলে গেলে নারীরা একাকিত্বে ভোগেন। এই সময় স্বামীর পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, যা বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে ধাবিত করে।
এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবাধ ব্যবহার নারী-পুরুষের মধ্যে নতুন সম্পর্ক তৈরি করছে, যার ফলে অনেকেই পরিবারের অমতে ঘর ছেড়ে বিয়ে করছেন এবং সেই বিয়ে বেশিদিন টিকছে না।
চাঁদপুর কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সুফিয়ান দেওয়ান উল্লেখ করেন, বিয়ের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-কানুন থাকলেও এবং কাজীরা জবাবদিহিতার অধীনে থাকলেও, কোর্টে সেই জবাবদিহিতা না থাকায় বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটছে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, প্রবাসী পরিবারগুলোতে নিখোঁজ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি।
তিনি জানান, থানা পুলিশ অধিকাংশ নিখোঁজ মামলার সমাধান করে থাকে। পরকীয়া ও বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনা কমাতে হলে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পারিবারিক বন্ধন জোরদার করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি।