ঢাকা ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
সহায়তার অভাবে পরিবারে উদ্বেগ

বিদেশের কারাগারে ১১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০১:১৬:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের কারাগারে আটক থাকা বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীদের সহায়তার অভাব নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রয়েছেন ১১ হাজার ৬২২ জন বাংলাদেশি।

অবৈধ অভিবাসন, মানবপাচার, মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ এবং মারামারির মতো বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তারা সেখানে আটক আছেন।

এই বিপুল সংখ্যক বন্দির মধ্যে কতজন মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে জানা গেছে, অন্তত ১৯টি দেশের কারাগারে বাংলাদেশিরা বন্দি জীবন যাপন করছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় আট হাজার জন আটক রয়েছেন সৌদি আরবের কারাগারে। এছাড়াও, মালয়েশিয়ায় ১ হাজার ২৬ জন, দুবাইয়ে ৮৯৬ জন এবং ওমানের কারাগারে ৪৪৪ জন বাংলাদেশি বন্দি আছেন।

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভকালে বিভিন্ন দেশে আটক ২০২ জন বাংলাদেশিকে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ফিরিয়ে এনেছে। তবে, এখনও ২২ জন আবুধাবীর কারাগারে দেশে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদেশের কারাগারে বন্দি সকল বাংলাদেশির সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা প্রথম এবং প্রধান কাজ। এরপর, সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোকে প্রতিটি বন্দীর মামলায় প্রয়োজনীয় আইনি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা উচিত।

অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, প্রবাসীদের স্বজনদের সহায়তার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তিনি মনে করেন, একটি সমন্বিত কাঠামোর মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান সহজ হতে পারে। একই সাথে, এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণারও প্রয়োজন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশ ছাড়ার আগে প্রত্যেক কর্মীকে তাদের গন্তব্য দেশের নিয়ম-কানুন ও আইন সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত করা জরুরি।

বিদেশের কারাগারে আটক স্বজনদের খোঁজখবর এবং সহায়তার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি আলাদা ডেস্ক খোলার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই ডেস্কের মাধ্যমে বন্দিদের পরিবারগুলো সহজে তথ্য জানতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা লাভ করতে সক্ষম হবে।

বিদেশের কারাগারে বন্দি এই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশির মানবাধিকার রক্ষা এবং তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

সহায়তার অভাবে পরিবারে উদ্বেগ

বিদেশের কারাগারে ১১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি

আপডেট সময় ০১:১৬:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

বিদেশের কারাগারে আটক থাকা বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীদের সহায়তার অভাব নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রয়েছেন ১১ হাজার ৬২২ জন বাংলাদেশি।

অবৈধ অভিবাসন, মানবপাচার, মাদক দ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ এবং মারামারির মতো বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তারা সেখানে আটক আছেন।

এই বিপুল সংখ্যক বন্দির মধ্যে কতজন মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে জানা গেছে, অন্তত ১৯টি দেশের কারাগারে বাংলাদেশিরা বন্দি জীবন যাপন করছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় আট হাজার জন আটক রয়েছেন সৌদি আরবের কারাগারে। এছাড়াও, মালয়েশিয়ায় ১ হাজার ২৬ জন, দুবাইয়ে ৮৯৬ জন এবং ওমানের কারাগারে ৪৪৪ জন বাংলাদেশি বন্দি আছেন।

অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভকালে বিভিন্ন দেশে আটক ২০২ জন বাংলাদেশিকে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ফিরিয়ে এনেছে। তবে, এখনও ২২ জন আবুধাবীর কারাগারে দেশে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদেশের কারাগারে বন্দি সকল বাংলাদেশির সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা প্রথম এবং প্রধান কাজ। এরপর, সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোকে প্রতিটি বন্দীর মামলায় প্রয়োজনীয় আইনি ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা উচিত।

অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, প্রবাসীদের স্বজনদের সহায়তার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তিনি মনে করেন, একটি সমন্বিত কাঠামোর মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান সহজ হতে পারে। একই সাথে, এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণারও প্রয়োজন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশ ছাড়ার আগে প্রত্যেক কর্মীকে তাদের গন্তব্য দেশের নিয়ম-কানুন ও আইন সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত করা জরুরি।

বিদেশের কারাগারে আটক স্বজনদের খোঁজখবর এবং সহায়তার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি আলাদা ডেস্ক খোলার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই ডেস্কের মাধ্যমে বন্দিদের পরিবারগুলো সহজে তথ্য জানতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা লাভ করতে সক্ষম হবে।

বিদেশের কারাগারে বন্দি এই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশির মানবাধিকার রক্ষা এবং তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।