ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একদিনে কমপক্ষে আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এতে করে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে।

গাজায় গত বছরের ১৮ মার্চ নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বার্তাসংস্থা আনাদোলু মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৩৬৫ জনে পৌঁছেছে বলে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি আক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় আহত আরও ১১৩ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০৫ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছে। তবে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় গত ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হেয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৫ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা ।

জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এর আগে গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।