ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৭০ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে বিএনপি এবং তার প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাংলাদেশে মানুষের ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেকোনো মূল্যে। মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

৩১ দফা নিয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর জেলা বিএনপির কর্মশালায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রশিক্ষণ সেলের নেতারা দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ৩১ দফার নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

তারেক রহমান বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে রাজপথে নেমেছিলাম। যে সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বহু নেতাকর্মী। তাদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশে শিশুহত্যা একমাত্র যুদ্ধ হলেই হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এই দেশে প্রায় ১০০ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই শিশুদের বলিদানও গণতন্ত্রের জন্য হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার আমল থেকেই বিএনপি সংস্কার শুরু করেছে। আমরা স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। শুধু ৩১ দফা দিয়ে থেমে থাকিনি। নেতাকর্মীদের মাধ্যমেই তা পৌঁছে দিতে হবে। বিএনপি দেশের ৭০ ভাগ ভালো কাজ করেছে। সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশের সমস্যা নিয়েই কর্মশালায় বেশি প্রশ্ন পেয়েছি। দেশের ভালো কিছু করতে পারলে বিএনপিই করতে পারবে এটা দেশের জনগণ জানে । এই আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বিএনপিকে যেতে হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, একটি মহলের জনমানুষের চাওয়ার সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে। আমরা চাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সব কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভোট যদি আপনার পক্ষে আনতে হয়, তবে জনগণের কাছে যেতে হবে। যেকোনো মূল্যে জনগণের সঙ্গে থাকার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, জনগণ বিএনপির ওপর আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব হলে তা বিএনপি পারবে। তাই আমি বলছি, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। জনগণ ছাড়া আমাদের উপাই নেই। আপনারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। রাজপথে মিছিল, মিটিং, সংগ্রাম করেছেন। এবার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দেশ গঠনের জন্য।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতৃত্ব ছিল, তরুণ সহকর্মী ছিলেন, তাদের অনেকেই আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে বয়স পার হয়ে গেছে। এটার ভুক্তভোগী শুধু ছাত্রদল নয়, এর বাইরে অনেক মানুষ আছেন। যারা স্বৈরাচারের রাজনীতি সমর্থন করতেন না। কিন্তু সরকারের পক্ষে না থাকায় তাদেরও চাকরি খেয়েছে বা চাকরি দেয়নি। এ বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছানোই হবে লক্ষ্য। নারীদের ফ্রি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে অনুকরণীয় হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিএনপির আমলে নারীদের আসন বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সেই ধারায় নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চলছে। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বিএনপির বিরুদ্ধে একটা অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে দৃশ্যমানের দিকে যাচ্ছে, সঙ্গে আরও কিছু প্রতিপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। সেটা মোকাবিলা করার সক্ষমতা রয়েছে বিএনপির। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকতে হবে।

কর্মশালায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, পঞ্চগড় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদসহ দিনাজপুর জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে: তারেক রহমান

আপডেট সময় ১২:১৯:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে বিএনপি এবং তার প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাংলাদেশে মানুষের ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেকোনো মূল্যে। মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

৩১ দফা নিয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর জেলা বিএনপির কর্মশালায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রশিক্ষণ সেলের নেতারা দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ৩১ দফার নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

তারেক রহমান বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে রাজপথে নেমেছিলাম। যে সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বহু নেতাকর্মী। তাদের এই বলিদানকে কোনোভাবেই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, পৃথিবীর যেকোনো দেশে শিশুহত্যা একমাত্র যুদ্ধ হলেই হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এই দেশে প্রায় ১০০ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই শিশুদের বলিদানও গণতন্ত্রের জন্য হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার আমল থেকেই বিএনপি সংস্কার শুরু করেছে। আমরা স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। শুধু ৩১ দফা দিয়ে থেমে থাকিনি। নেতাকর্মীদের মাধ্যমেই তা পৌঁছে দিতে হবে। বিএনপি দেশের ৭০ ভাগ ভালো কাজ করেছে। সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশের সমস্যা নিয়েই কর্মশালায় বেশি প্রশ্ন পেয়েছি। দেশের ভালো কিছু করতে পারলে বিএনপিই করতে পারবে এটা দেশের জনগণ জানে । এই আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বিএনপিকে যেতে হয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, একটি মহলের জনমানুষের চাওয়ার সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে। আমরা চাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সব কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ভোট যদি আপনার পক্ষে আনতে হয়, তবে জনগণের কাছে যেতে হবে। যেকোনো মূল্যে জনগণের সঙ্গে থাকার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, জনগণ বিএনপির ওপর আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব হলে তা বিএনপি পারবে। তাই আমি বলছি, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। জনগণ ছাড়া আমাদের উপাই নেই। আপনারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। রাজপথে মিছিল, মিটিং, সংগ্রাম করেছেন। এবার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দেশ গঠনের জন্য।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতৃত্ব ছিল, তরুণ সহকর্মী ছিলেন, তাদের অনেকেই আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে বয়স পার হয়ে গেছে। এটার ভুক্তভোগী শুধু ছাত্রদল নয়, এর বাইরে অনেক মানুষ আছেন। যারা স্বৈরাচারের রাজনীতি সমর্থন করতেন না। কিন্তু সরকারের পক্ষে না থাকায় তাদেরও চাকরি খেয়েছে বা চাকরি দেয়নি। এ বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছানোই হবে লক্ষ্য। নারীদের ফ্রি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে অনুকরণীয় হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিএনপির আমলে নারীদের আসন বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সেই ধারায় নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চলছে। এ বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বিএনপির বিরুদ্ধে একটা অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে দৃশ্যমানের দিকে যাচ্ছে, সঙ্গে আরও কিছু প্রতিপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। সেটা মোকাবিলা করার সক্ষমতা রয়েছে বিএনপির। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকতে হবে।

কর্মশালায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, পঞ্চগড় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লি উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদসহ দিনাজপুর জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ।