ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
কক্সবাজারে বিতর্কিত সফর

আকস্মিকভাবে ঢাকা ছাড়লেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১০:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • / ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের আকস্মিক ঢাকা ত্যাগ ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য ও গুঞ্জন। রোববার সন্ধ্যায় তিনি এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দুবাই হয়ে ইসলামাবাদের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত ৯ মে কক্সবাজার সফরকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে জরুরি তলব করে।

জানা গেছে, হাইকমিশনার তিন দিনের ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। সেখানে তার সাথে ছিলেন ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বন্ধু আজহার মাহমুদ এবং হাফিজা হক শাহ নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সহকারী পরিচালক।

তাদের হোটেল সি-পার্লে অবস্থান এবং একসাথে ঘোরাঘুরির খবর স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা ব্যক্তিগত ভ্রমণের কথা জানালেও, তাদের একসাথে টিকিট কাটা এবং গোপনে ভ্রমণের বিষয়টি সন্দেহের সৃষ্টি করে।

সূত্র আরও জানায়, হাফিজা হক শাহ ঢাকার ঝিগাতলায় বসবাস করেন এবং হাইকমিশনার ও তার বন্ধুর সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হাইকমিশনারের সাথে একাধিক ছবিও দেখা গেছে, যা পরবর্তীতে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে হাফিজা হক শাহ দাবি করেছেন, হাইকমিশনার তার পূর্বপরিচিত এবং কক্সবাজারে তাদের দেখা হয়েছে বটে, তবে সেটি একটি সাধারণ সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। একসাথে ঘোরাঘুরির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

তবে, প্রাপ্ত টিকিট অনুযায়ী, হাইকমিশনারের কক্সবাজার এবং ঢাকা ফেরার টিকিটে পরিবারের কোনো সদস্যের নাম নেই, বরং তার বন্ধু আজহার মাহমুদের নাম উল্লেখ রয়েছে।

হাইকমিশনারের আকস্মিক ঢাকা ত্যাগের কারণ হিসেবে কূটনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, কক্সবাজারের বিতর্কিত ভ্রমণ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্দেহের জের ধরে বিষয়টি পাকিস্তান সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছায়।

এরপরই তাকে জরুরিভাবে ইসলামাবাদে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি তার সফরসঙ্গীদের কক্সবাজারে রেখেই দ্রুত ঢাকায় ফিরে আসেন এবং রোববার রাতেই পাকিস্তান যাত্রা করেন।

ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন অবশ্য এই বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ সরকারি কাজে পাকিস্তানে গেছেন।

তবে, তার আকস্মিক প্রস্থান এবং সফরসঙ্গীদের ফেলে আসার ঘটনা স্বাভাবিক কূটনৈতিক প্রোটোকলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এই ঘটনা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, তা এখন দেখার বিষয়। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আরও বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি, ফলে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

কক্সবাজারে বিতর্কিত সফর

আকস্মিকভাবে ঢাকা ছাড়লেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার

আপডেট সময় ১০:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের আকস্মিক ঢাকা ত্যাগ ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য ও গুঞ্জন। রোববার সন্ধ্যায় তিনি এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে দুবাই হয়ে ইসলামাবাদের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত ৯ মে কক্সবাজার সফরকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে জরুরি তলব করে।

জানা গেছে, হাইকমিশনার তিন দিনের ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। সেখানে তার সাথে ছিলেন ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বন্ধু আজহার মাহমুদ এবং হাফিজা হক শাহ নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সহকারী পরিচালক।

তাদের হোটেল সি-পার্লে অবস্থান এবং একসাথে ঘোরাঘুরির খবর স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা ব্যক্তিগত ভ্রমণের কথা জানালেও, তাদের একসাথে টিকিট কাটা এবং গোপনে ভ্রমণের বিষয়টি সন্দেহের সৃষ্টি করে।

সূত্র আরও জানায়, হাফিজা হক শাহ ঢাকার ঝিগাতলায় বসবাস করেন এবং হাইকমিশনার ও তার বন্ধুর সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হাইকমিশনারের সাথে একাধিক ছবিও দেখা গেছে, যা পরবর্তীতে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে হাফিজা হক শাহ দাবি করেছেন, হাইকমিশনার তার পূর্বপরিচিত এবং কক্সবাজারে তাদের দেখা হয়েছে বটে, তবে সেটি একটি সাধারণ সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। একসাথে ঘোরাঘুরির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

তবে, প্রাপ্ত টিকিট অনুযায়ী, হাইকমিশনারের কক্সবাজার এবং ঢাকা ফেরার টিকিটে পরিবারের কোনো সদস্যের নাম নেই, বরং তার বন্ধু আজহার মাহমুদের নাম উল্লেখ রয়েছে।

হাইকমিশনারের আকস্মিক ঢাকা ত্যাগের কারণ হিসেবে কূটনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, কক্সবাজারের বিতর্কিত ভ্রমণ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্দেহের জের ধরে বিষয়টি পাকিস্তান সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছায়।

এরপরই তাকে জরুরিভাবে ইসলামাবাদে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি তার সফরসঙ্গীদের কক্সবাজারে রেখেই দ্রুত ঢাকায় ফিরে আসেন এবং রোববার রাতেই পাকিস্তান যাত্রা করেন।

ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন অবশ্য এই বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ সরকারি কাজে পাকিস্তানে গেছেন।

তবে, তার আকস্মিক প্রস্থান এবং সফরসঙ্গীদের ফেলে আসার ঘটনা স্বাভাবিক কূটনৈতিক প্রোটোকলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এই ঘটনা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, তা এখন দেখার বিষয়। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আরও বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি, ফলে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।