চার মাসে দেশে ১,২৪৬টি হত্যা মামলা

- আপডেট সময় ১২:৫৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
- / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে
২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে দেশে ১,২৪৬টি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। হত্যার পাশাপাশি ডাকাতি, নারী-শিশু নির্যাতন, এবং মাদক-সংক্রান্ত অপরাধও বেড়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ১,২৪৬টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে, যেখানে গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ১,০০৬টি। অর্থাৎ, এ বছর ২৪০টি মামলা বেশি। এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৩৬টি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জানুয়ারির ২৯৪, ফেব্রুয়ারির ৩০০, এবং মার্চের ৩১৬টির তুলনায় বেশি। এই হিসাবে, প্রতিদিন গড়ে ১০টির বেশি হত্যার ঘটনা ঘটছে।
হত্যার পাশাপাশি অন্যান্য অপরাধের হারও বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ডাকাতি ও দস্যুতার ৮৯৫টি মামলা দায়ের হয়েছে, যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫৪৬। এই হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে ২২৩টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আরও উদ্বেগজনক হলো নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা।
এই চার মাসে এ ধরনের ৭,০১৩টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা গত বছরের ৫,৫৪৬টির তুলনায় অনেক বেশি। মার্চে ২,০৫৪টি এবং এপ্রিলে ২,০৮৯টি মামলার মাধ্যমে এই অপরাধের ভয়াবহতা প্রকাশ পেয়েছে।
অঞ্চলভিত্তিক তথ্যে দেখা যায়, ঢাকা রেঞ্জে সবচেয়ে বেশি ২৮২টি হত্যা মামলা হয়েছে, গড়ে প্রতি মাসে ৭১টি। ঢাকা মহানগর পুলিশের এলাকায় এই চার মাসে ১৩৬টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে, মাসে গড়ে ৩৪টি।
এছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়েছে, যা আইন-শৃঙ্খলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক বলেন, “সামাজিক অস্থিরতার কারণে অপরাধ বাড়ছে। তবে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনছে।”
আইজিপি বাহারুল আলম জানিয়েছেন, “আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।”
তবে সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে সামাজিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, এবং শিক্ষার অভাবের মতো কারণ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “হত্যা ও নারী-শিশু নির্যাতনের মতো অপরাধ কমাতে হলে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।”
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সম্প্রতি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নতুন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “আমরা সবসময় তৎপর রয়েছি। জনগণের সহযোগিতা পেলে অপরাধ আরও কমানো সম্ভব।”