ঢাকা ১০:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মন পেতে ১০০ পণ্যে শুল্ক ছাড়ের পথে বাংলাদেশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ০৮:৫৩:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ২৫১ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘদিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। শোনা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের মন জয় করতে এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার।

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেই প্রায় ১০০ ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)-এর সঙ্গে বাজেট নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকের মূল আলোচনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক কমানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এনবিআর প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত ১০০টি ট্যারিফ লাইনের পণ্যে শুল্ক একেবারে শূন্য করার প্রস্তাব দেয়।

‘ট্যারিফ লাইন’ বা এইচএস কোডের মাধ্যমেই মূলত আমদানি পণ্যের শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। এই তালিকায় তেল, গ্যাস, অস্ত্র এবং ফাইটার বিমানের যন্ত্রাংশের মতো প্রায় ১৫-১৬টি পণ্যও রয়েছে, যা মূলত সরকারই কিনে থাকে।

এনবিআর মনে করছে, সরকারিভাবে এই পণ্যগুলো কেনার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব। কারণ, সরকার যখন অস্ত্র বা যুদ্ধবিমান কেনে, তখন চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়, ফলে রাজস্ব হারানোর তেমন ঝুঁকি থাকে না।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বহু দেশের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছিল।

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। তার ওপর আরও ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক চাপানোয় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ঢোকা প্রায় ৫২ শতাংশ শুল্কের হুমকিতে পড়ে। তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার আমেরিকা হওয়ায়, এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা তৈরি হয়।

বাংলাদেশের মতো আরও অনেক দেশই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করে। কোনো কোনো দেশ তো মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক একেবারে শূন্য করার ঘোষণাও দেয়। এর আগে থেকেই বাংলাদেশ ১৯০ ধরনের পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। এবার আরও ১০০টি পণ্য সেই তালিকায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের মন পেতে ১০০ পণ্যে শুল্ক ছাড়ের পথে বাংলাদেশ!

আপডেট সময় ০৮:৫৩:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। শোনা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের মন জয় করতে এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার।

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেই প্রায় ১০০ ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)-এর সঙ্গে বাজেট নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকের মূল আলোচনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক কমানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এনবিআর প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত ১০০টি ট্যারিফ লাইনের পণ্যে শুল্ক একেবারে শূন্য করার প্রস্তাব দেয়।

‘ট্যারিফ লাইন’ বা এইচএস কোডের মাধ্যমেই মূলত আমদানি পণ্যের শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। এই তালিকায় তেল, গ্যাস, অস্ত্র এবং ফাইটার বিমানের যন্ত্রাংশের মতো প্রায় ১৫-১৬টি পণ্যও রয়েছে, যা মূলত সরকারই কিনে থাকে।

এনবিআর মনে করছে, সরকারিভাবে এই পণ্যগুলো কেনার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব। কারণ, সরকার যখন অস্ত্র বা যুদ্ধবিমান কেনে, তখন চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়, ফলে রাজস্ব হারানোর তেমন ঝুঁকি থাকে না।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয় মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বহু দেশের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছিল।

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। তার ওপর আরও ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক চাপানোয় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ঢোকা প্রায় ৫২ শতাংশ শুল্কের হুমকিতে পড়ে। তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার আমেরিকা হওয়ায়, এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা তৈরি হয়।

বাংলাদেশের মতো আরও অনেক দেশই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেনদরবার শুরু করে। কোনো কোনো দেশ তো মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক একেবারে শূন্য করার ঘোষণাও দেয়। এর আগে থেকেই বাংলাদেশ ১৯০ ধরনের পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। এবার আরও ১০০টি পণ্য সেই তালিকায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।