সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে টিকটক এখন তরুণ প্রজন্মের কাছে এক বিশাল আকর্ষণ। নতুন নতুন ট্রেন্ড, রিলস আর ভিডিও বানানোর নেশায় অনেক সময় ছেলে-মেয়েরা এমন কিছু করে বসে, যা তাদের বিপদে ফেলে দেয়।

এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে, যেখানে টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে দুই কলেজছাত্র ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছিল সোমবার, অর্থাৎ ১৬ই জুন বিকেলে।

নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার আইহাই ইউনিয়নের বামনপাড়া সীমান্ত এলাকার ২৪৬ নম্বর পিলারের কাছে এই দুই ছাত্র, তাদের আরও চার-পাঁচজন বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতের সীমান্ত দেখা।

জানা গেছে, এই তরুণরা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কাঁটাতারের বেড়া ধরে টিকটক ভিডিও বানাচ্ছিলেন এবং সেলফি তুলছিলেন।

আর ঠিক তখনই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী, বিএসএফের সদস্যদের নজরে পড়েন তারা। সঙ্গে সঙ্গে বিএসএফ তাদের মধ্যে দুজনকে আটক করে। এই দুই কলেজছাত্র হলেন নওগাঁ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মোহাম্মাদ মিনহাজুল ইসলাম (২৩) এবং সাপাহার সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মোহাম্মাদ তামিম আহমেদ সৌরভ (২৩)। দুজনেই বদলগাছি উপজেলার বাসিন্দা।

এই খবর পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, সংক্ষেপে বিজিবি। বামনপাড়া বিওপির নায়েক সুবেদার আবু তালেব তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং আটককৃত ছাত্রদের উদ্ধারের চেষ্টা চালান। এরপর, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকেই বিএসএফ আটক দুই ছাত্রকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।

তবে, দেশে ফিরে আসার পরেই কিন্তু তাদের বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নওগাঁ-১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক জানিয়েছেন, যেহেতু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে হোক, দেশের সীমান্তরেখা পেরিয়ে ভারতের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন, তাই বিজিবি তাদের সাপাহার থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ নিশ্চিত করেছেন যে, বিজিবির অভিযোগের ভিত্তিতে এই দুই কলেজছাত্রের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের  দায়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে।