আওয়ামী লীগ নিয়ে সম্পাদকীয়তে যা লিখেছে ’দ্য ডন’

- আপডেট সময় ০৬:৪১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
- / ২৫৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ এবং তাদের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডন’ একটি বিশেষ সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে।
‘দ্য ডন’ তাদের সম্পাদকীয়তে লিখেছে, বাংলাদেশ এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী বেসামরিক সরকারের গঠন শান্তির পথে একটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তন আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ সেই প্রতিশ্রুত নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ যতই গুরুতর হোক না কেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সকলের অংশগ্রহণ জরুরি।
বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দল আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সহজে মুছে ফেলা যায় না। দলটির বিশাল জনসমর্থন রয়েছে এবং তারা এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি।
‘দ্য ডন’ মনে করে, এই দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের দুর্বল গণতন্ত্রকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে এবং বিপুল সংখ্যক ভোটারের ভোটাধিকার কেড়ে নেবে। এমনকি ভারতও এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে, যদিও তাদের নিজস্ব স্বার্থ থাকতে পারে।
তবে মূল কথা হলো, একটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তিকে বাদ দিলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আরও জোরালো হবে এবং জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরবে, যা এই মুহূর্তে কাম্য নয়।
পাকিস্তানের এই প্রভাবশালী পত্রিকাটি অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের প্রধান দায়িত্ব মনে করিয়ে দিয়েছে। তাদের মতে, শান্তিপূর্ণ ও বৈধ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সমাধান করা সেই লক্ষ্য অর্জনকে কঠিন করে তুলবে।
ড. ইউনূসকে অবশ্যই আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তার গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রমাণ দিতে হবে। একটি স্পষ্ট নির্বাচনকালীন সময়সূচী নির্ধারণ এবং সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমেই কেবল পরবর্তী সরকারের বৈধতা পোক্ত হবে
সবশেষে ‘দ্য ডন’ তাদের সম্পাদকীয়তে স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়া উচিত ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে, কোনো আদালতের নির্দেশ বা রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নয়।