বাউলশিল্পী থেকে আসামি মমতাজ: জীবনের নাটকীয় উত্থান-পতন

- আপডেট সময় ০১:২০:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
- / ২৬০ বার পড়া হয়েছে
একসময় তিনি ছিলেন আমজনতার বাউল গানের জনপ্রিয় শিল্পী। এরপর হয়েছেন জাতীয় সংসদ সদস্য, আর এখন একাধিক মামলার আসামি। তিনি হলেন ফোকসম্রাজ্ঞী’ হিসেব খ্যাত মমতাজ বেগম।
মানিকগঞ্জের এক প্রত্যন্ত গ্রামে, বাউলশিল্পী মধু বয়াতির ঘরে জন্ম মমতাজের। দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে গান গেয়েই জীবন শুরু। বাবা এবং মাতাল রাজ্জাক দেওয়ানের কাছে গানের হাতেখড়ি। এরপর রশিদ সরকারের কাছে তালিম নেন।
একদম কিশোরী বয়সেই মমতাজ মানিকগঞ্জে পথে-প্রান্তরে বিচ্ছেদ, পালাগান, উঠান বৈঠকিসহ লোকজ গান করেন। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগীতানুষ্ঠানে গান করতে শুরু করেন। এভাবিই তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। পরে তাঁর গানের কয়েক শ একক অ্যালবাম প্রকাশ ও ব্যবসায়িক সফলতা লাভ করে।
২০০৪ সালে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে গান গাওয়ার সুযোগ পান মমতাজ। এরপর তিনি দেশের সংগীতাঙ্গনের আরো জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন।
‘ফোকসম্রাজ্ঞী’ হিসেবে খ্যাতি পান। চার দশকের সংগীতজীবনে সাত শতাধিক অ্যালবাম আছে তার। শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে আসেন। দ্রুতই সংসদ সদস্য হন। এরপর থেকেই তার জীবনে আসে নাটকীয় পরিবর্তন। এলাকায় বাড়তে থাকে তার আধিপত্য। অভিযোগ ওঠে, পরিবহনে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
২০১৪ থেকে ২০২৪, মাত্র দশ বছরে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি থেকে বেড়ে প্রায় ৬ কোটি টাকা হয়। স্থাবর সম্পদও বাড়ে কয়েক কোটি টাকা। অভিযোগ আছে, তার প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
সিঙ্গাইরে রেস্টুরেন্ট, কোল্ড স্টোরেজ, দোতলা বাড়িসহ ঢাকার মহাখালী ও কানাডার টরন্টোতে বাড়ি থাকারও গুঞ্জন রয়েছে।
তবে, এই সাফল্যের উল্টো পিঠে রয়েছে অন্ধকার দিক। হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি তিনি। সিঙ্গাইরে হরতালের মিছিলে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনি প্রধান আসামি। হরিরামপুরে হামলা ও ভাঙচুরের মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ। গত ১২ মে রাতে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে আছেন।