ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

তিন দফা দাবিতে চলমান জবির আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা
  • আপডেট সময় ১২:১২:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / ২৫৩ বার পড়া হয়েছে

টানা তৃতীয় দিনের মতো তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়াতেই বাড়ছে তাদের সংখ্যা। জবি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের মতো আজও বাসভর্তি করে এসে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।

সকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন সংলগ্ন রাজধানীর কাকরাইল এলাকা ঘুরে আন্দোলনের এমন চিত্র দেখা গেছে। পরে বেলা ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভর্তি করে এসে আন্দোলনে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিগত দুইদিনের মতো আজও কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় ‘তুমি কে আমি কে, জবিয়ান জবিয়ান, ‘বৈষম্যের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে আজ তারা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান না নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার সড়কের মুখে অবস্থান নিয়েছেন তারা। ফলে খোলা রয়েছে কাকরাইল মোড়, যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রুবেল রানা বলেন, আমরা আপাতত জনগণের ভোগান্তি এড়াতে একপাশে এসে অবস্থান নিয়েছি। তবে আমাদের আরও শিক্ষার্থী আসছে। এরপর কাকরাইল মোড় অবরোধ করা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিংয়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।

সংঘর্ষের পর শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি আহত ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো

১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।

২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।

৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

তিন দফা দাবিতে চলমান জবির আন্দোলন

আপডেট সময় ১২:১২:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

টানা তৃতীয় দিনের মতো তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়াতেই বাড়ছে তাদের সংখ্যা। জবি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের মতো আজও বাসভর্তি করে এসে আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।

সকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন সংলগ্ন রাজধানীর কাকরাইল এলাকা ঘুরে আন্দোলনের এমন চিত্র দেখা গেছে। পরে বেলা ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভর্তি করে এসে আন্দোলনে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিগত দুইদিনের মতো আজও কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় ‘তুমি কে আমি কে, জবিয়ান জবিয়ান, ‘বৈষম্যের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে আজ তারা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান না নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার সড়কের মুখে অবস্থান নিয়েছেন তারা। ফলে খোলা রয়েছে কাকরাইল মোড়, যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রুবেল রানা বলেন, আমরা আপাতত জনগণের ভোগান্তি এড়াতে একপাশে এসে অবস্থান নিয়েছি। তবে আমাদের আরও শিক্ষার্থী আসছে। এরপর কাকরাইল মোড় অবরোধ করা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিংয়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।

সংঘর্ষের পর শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি আহত ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো

১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।

২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।

৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।